বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, একটি জাতিকে গড়ে তুলতে সুশিক্ষার বিকল্প নেই। মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বাসস্থানের মতো শিক্ষা অর্জন অতীব প্রয়োজন। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এদেশের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের সন্তানরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। তিনি আরও বলেন, শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতিগোষ্ঠী মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। এইদেশে এক তৃতীয়াংশ মানুষ সরাসরি কায়িক শ্রমের সাথে জড়িত। যাদের সন্তানরা আধুনিকতার এই যুগেও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। অধিকাংশ শ্রমিকের সন্তান শুধুমাত্র আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় বিদ্যালয়ে যেতে পারেন না। তিনি আরও বলেন, যারা কোনোভাবে বিদ্যালয়ে যান তারাও বিভিন্ন প্রতিকূলতার সাথে টিকতে না পেরে শিক্ষা জীবন শেষ করতে পারছেন না।
এটি জাতির জন্য অশনিসঙ্কেত। কারণ রাষ্ট্রের বড় একটি অংশ শিক্ষার আলো থেকে দূরে থাকলে আগামী দিনে দেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। অন্য দিকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত ছেলে-মেয়ে তার পরিবারের সামগ্রিক অবস্থার পরিবর্তন করতে যথেষ্ট। কারণ সুশিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। খুলনা মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে মহান মে দিবস ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে খালিশপুর বিআইডিসি সড়কের নিজস্ব কার্যালয়ে সুবিধা বঞ্চিত দর্জি শ্রমিকদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
খুলনা মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে মহান মে দিবস ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে খালিশপুর বিআইডিসি সড়কের নিজস্ব কার্যালয়ে সুবিধা বঞ্চিত শ্রমিক পরিবারের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
মহানগর সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী এর সভাপতিত্বে ও সহ-সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম এর পরিচালনায় সুবিধা বঞ্চিত প্রমিক পরিবারের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা মাস্টার শফিকুল আলম, মহানগরী সহ-সভাপতি এস.এম মাহফুজুর রহমান, কাজী মাহফুজুর রহমান, শ্রমিক নেতা আসাদুজ্জামান, আল হাফিজ সোহাগ, বুলবুল কবির, বদরুর রশিদ মিন্টু, আনিসুর রহমান, মোখলেসুর রহমান, শহিদুল ইসলাম, মালেক মুন্সী, কামরুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান জুনায়েদ, মুহিব্বুর রসুল, ইমদাদুল হক, মু মাসুদ, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ সুবিধা বঞ্চিত শ্রমিক পরিবারের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন।
মাস্টার শফিকুল আলম বলেন, আমরা শ্রমিক-মালিক ভেদাভেদে বিশ্বাসী নই। আমরা শ্রমিক-মালিক সংঘাত চাই না। কিন্তু তাই বলে শ্রমিকদের শোষণ করা হবে, সেটা আমরা হতে দেবো না। শ্রমিক-মালিক ভাই ভাই হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস প্রতি বছর আমাদের ডাক দিয়ে যায়। কিন্তু বাস্তবতা হলো প্রতি বছর ব্যাপকভাবে এই দিনটি পালন করা হলেও শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের কোনো অগ্রগতি ঘটে না।
বিশ্বের নানাপ্রান্তে শ্রমিকরা আজও নিস্পেষিত-নির্যাতিত হচ্ছে। আমাদের দেশে বিভিন্ন সেক্টরের শ্রমিকরা অবাধে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার থেকে বঞ্চিত। আজকে দেশ নতুন করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। মানুষ মুক্তভাবে নিঃস্বাস নিচ্ছে। বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। এই সময়ে এসে শ্রমিকরা যেন তাদের অধিকার আদায়ের সংগঠন অবাধভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারে, শ্রম অধিদপ্তরের কর্তাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সভাপতির বক্তব্যে আজিজুল ইসলাম ফারাজী বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের প্রেরণার দিন। শ্রমিকদের রক্তাক্ত ইতিহাসের এই দিনে আমাদের একটাই শপথ, আমরা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে এগিয়ে যাব, ইনশাআল্লাহ। যেখানেই শ্রমিকরা নির্যাতিত হবে, সেখানেই শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন তার প্রতিকার করতে হাজির হয়ে যাবে। শ্রমিক জনতাকে সাথে নিয়ে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে ফেডারেশন ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখবে, ইনশাআল্লাহ।
ঊ আ- এইচআর