বিনোদন ডেস্ক: কানাডায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত নাট্যজন, নির্দেশক ও অভিনেতা জামাল উদ্দিন হোসেন।
অভিনেতা জামাল উদ্দিন হোসেন শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় কানাডার রকিভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।যুক্তরাষ্ট্রর আটলান্টা থেকে কানাডার ক্যালগেরিতে ছেলে তাশফিন হোসেন তপুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন অভিনেতা জামালউদ্দিন হোসেন।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা জানান, তার ইউরিন ইনফেকশন হয়েছে। পরে তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছিলেন না। এর পরই চিকিৎসকরা তাকে ভেন্টিলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি দীর্ঘ দিন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
টিভি নাটক দিয়ে দর্শকের কাছে জনপ্রিয়তা পেলেও মঞ্চ ছিল তার সবচেয়ে ভালোবাসার মাধ্যম। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি থেকে মঞ্চ নাটকে অভিনয় শুরু করেন জামালউদ্দিন। পরে কাজ করেছেন চলচ্চিত্র ও টিভি নাটকেও। অভিনেতার শেষ জীবন কেটেছে আমেরিকায়। সেখানে ২০০৬ সাল থেকে স্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন তিনি। প্রকৌশলী হিসেবে চাকরি করতেন, পাশপাশি মঞ্চেও ছিলেন সক্রিয়। নিউইয়র্কে তার স্ত্রী অভিনেত্রী রওশন আরা হোসেনও থাকতেন।
জামালউদ্দিন হোসেন ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন। ১৯৯৭ সালে তিনি তার নিজের নাট্যগোষ্ঠী নাগরিক নাট্যাঙ্গন অনসাম্বল শুরু করেন এবং এর সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বেতার টেলিভিশন শিল্পী সংসদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
জামালউদ্দিন হোসেন ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’, ‘রাজা রাণী’, ‘চাঁদ বণিকের পালা’, ‘আমি নই’, ‘বিবি সাহেব’, ‘যুগলবন্দী’সহ কয়েকটি আলোচিত মঞ্চ নাটক পরিচালনা করেছেন।
জামালউদ্দিন হোসেনের জন্ম ৮ অক্টোবর ১৯৪৩ সালে। তিনি বাংলাদেশি চলচ্চিত্র অভিনেতা, পরিচালক ও নাট্যকর্মী। শিল্পকলায় তার অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০১৩ সালে তাকে একুশে পদক প্রদান করেন।
জামালউদ্দিন হোসেন ১৯৭৫ সালে অভিনেত্রী রওশন আরা হোসেনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তারা উভয়ই নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের শিল্পী ছিলেন, সেখানেই তাদের প্রথম পরিচয় হয়েছিল। তিনি দুই সন্তানের জনক ছিলেন।
ঊষার আলো-এসএ