ঊষার আলো রিপোর্ট : নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডায়রিয়ার প্রকোপে গত ১৫ দিনে ১৬০০ মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ৩টি শিশুর।
আজ ১৬ জুন বুধবার সকালে ভাসানচরে ২০ শয্যা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার তানভীর আনোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, গত ১৫ দিনে ৬০০ ডায়রিয়া রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা ও আরও ১ হাজার রোগীকে বহির্বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে পুষ্টিহীনতা ও ডায়রিয়ায় ৩ শিশুর মৃত্য হয়েছে।
তারা হচ্ছে, ক্যাম্পের ১০ নম্বর ক্লাস্টারের বাসিন্দা মো. সিরাজের মেয়ে জয়নব (১), ৫৬ নম্বর ক্লাস্টারের বাসিন্দা জানে আলমের ছেলে জিসান (২) ও ৫৫ নম্বর ক্লাস্টারের আবদুর রহিমের মেয়ে উম্মে হাবিবা (৩ মাস)।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, গত ৪-১৪ জুন পর্যন্ত সেখানে ৫৮২ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে গুরুতর ৩ জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। বর্তমানে ভাসানচর ২০ শয্যার হাসপাতালে ১১ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি রয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৮ হাজার ৩৪৭ জন রোহিঙ্গা ভাসানচর ক্যাম্পে রয়েছে। তাদের জন্য রয়েছে ২০ শয্যার একটি হাসপাতাল। পাশাপাশি ২০টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে সেখানে। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য ২ জন মেডিকেল অফিসার, ২ জন উপ-সহকারী কমিউনিটি অফিসার, ২ জন নার্স, ১ জন মিডওয়াইফ, ২ জন ওয়ার্ডবয় ও ২ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী রয়েছে।
এদিকে রোগী বহনের জন্য হাতিয়ার জনতা বাজারে সার্বক্ষণিক ২ টি অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়েছে। গুরুতর কোনো রোগীকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর দরকার হলে এগুলো ব্যবহার করা হয়। এর পাশাপাশি ৫ টি এনজিওর কর্মীরা কাজ করছে ভাসানচরে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্যাম্পের ২০ শয্যা হাসপাতালে প্রতিদিন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৩৫-৪০ জন রোগী ভর্তি থাকে। শয্যার অভাবে হাসপাতালের মেঝে, বারান্দায় রেখে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালের বহির্বিভাগে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৬০-৭০ জন রোগী প্রতিদিন চিকিৎসাসেবা নিচ্ছে। সব মিলিয়ে রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে ভাসানচর হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা।
মেডিকেল অফিসার তানভীর আনোয়ার বলেন, হাসপাতালে অন্য রোগী ভর্তি না করে শুধু ডায়রিয়া রোগীদের ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শুরুতে স্যালাইন ও অন্যান্য ওষুধের কিছুটা সঙ্কট থাকলেও এখন নেই। পর্যাপ্ত ওষুধ রয়েছে ও জেলা থেকে আরও পাঠানো হচ্ছে।
নোয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেছেন, ‘তীব্র গরমের পর বৃষ্টি এবং ব্যক্তিগত পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবেই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে আশঙ্কাজনক হারে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। ডায়রিয়া প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন কাজ করছে।’
(ঊষার আলো- এম.এইচ)