ঊষার আলো রিপোর্ট : ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ত্রুটিমুক্ত হওয়ার আধা ঘণ্টা পর অবশেষে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ভোট দিতে পেরেছেন।
এর আগে মোস্তাফিজার রহমান মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে আলমনগর কলেজ রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে ইভিএম ত্রুটির কারণে ভোট দিতে পারেননি। ভোট না দেওয়ার বিষয়টি ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানকে তিনি অভিযোগ করেন। মেয়র প্রার্থী মোস্তফার অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রের একটি বুথের ইভিএম যন্ত্র ঠিক করা হয়। সকাল ৯টা থেকে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর অবশেষে সাড়ে ৯টায় তিনি তার ভোট প্রয়োগ করেন।
মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ভোট দেওয়ার পর আবারও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, আমরা আগেও রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ইভিএমের বিষয় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছি। এভাবে যদি ইভিএম ত্রুটি দেখা দেয় তাহলে মানুষের বিড়ম্বনা হবে।
আলমনগর কলেজ রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, মেয়র প্রার্থী মোস্তফার ভোট দেওয়ার সময় ইভিএমে ত্রুটি হয়েছিল একথা ঠিক, তবে এর কিছুক্ষণ পর ইভিএমের ত্রুটি দূর করা হয়। অবশেষে আধা ঘন্টা পর মেয়র প্রার্থী মোস্তফা ভোট দিয়েছেন।
এবার রসিকের ৩৩টি ওয়ার্ডের দুই লাখ ১২ হাজার ৩০২ জন পুরুষ এবং দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন নারী ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। আর তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার ১ জন।
এবারের নির্বাচনে মোট প্রার্থী রয়েছেন ২৬০ জন। এরমধ্যে মেয়র পদে ৯ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৮৩ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের একজন কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
মেয়র পদে নয় প্রার্থী হলেন- জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) শফিয়ার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল, খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল রাজু, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম খোকন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান বনি ও লতিফুর রহমান মিলন।
এই নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সদ্য সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এবং আওয়ামী লীগ মনোনীত হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়ার মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং অফিসার আবদুল বাতেন জানিয়েছেন, ভোট ঘিরে কেন্দ্রে কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রতি সাধারণ কেন্দ্রে ১৫ জনের এবং ৮৬টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৬ জনের ফোর্স মোতায়েন রাখা হয়েছে।
এছাড়া নির্বাচনী আচরণ বিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিয়োগ করা হয়েছে ৩৩ জন নির্বাহী হাকিম। তারা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন অপরাধের সংক্ষিপ্ত বিচার কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ১৬ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে।
এদিকে র্যাব-বিজিবির একাধিক টিম মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নির্বাচনী এলাকায় নিয়োজিত রয়েছে। তারা ভোটের আগে ও পরে মোট পাঁচদিনের জন্য নিয়োজিত থাকবেন।
রসিক নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এক হাজার ৮০৭ সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে রংপুর এবং ঢাকায় নির্বাচন অফিস থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে। কোথাও কোনো অনিয়ম দেখতে পেলেই গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনের মতো ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন এই রিটার্নিং অফিসার।
ঊষার আলো-এসএ