UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে বনানী মডেল স্কুলের সভা আয়োজন

usharalodesk
অক্টোবর ২, ২০২২ ১২:৪৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : অবকাঠামো ও শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়নে অভিভাবকদের নিয়ে সমাবেশ করেছে রাজধানীর বনানী মডেল স্কুল।গত ৩০ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) বিকেল ৩টায় ৪২ বছরের ঐতিহ্যবাহী স্কুলে ভবনে এ সভার আয়োজন করা হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন শতাধিক অভিভাবক, তাদের ছেলে-মেয়েরা, শিক্ষকমন্ডলী এবং স্কুলের ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্যরা।

এছাড়াও স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত বনানী মডেল স্কুল এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সূচনা বক্তব্যে অনুষ্ঠানের সভাপতি বনানী মডেলের প্রধান শিক্ষক কাজী শফিকুল ইসলাম স্কুলের গত ৫ বছরে সার্বিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন।

তিনি জানান, তার সময়কালে স্কুলে নতুন একটি ছয়তলা ভবন তৈরি হয়েছে। আরও একটি ভবন নির্মাণাধীন। স্কুলের উন্নয়নে ব্যবস্থাপনা পরিষদের বর্তমান সভাপতি মীর মোশারফ হোসেনের অবদানের কথা উল্লেখ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।সভাপতির বক্তব্যকে সমর্থন জানান উপস্থিত অভিভাবকদের অনেকেই। তবে এরইসঙ্গে পাঠদান, শিক্ষকদের যোগ্যতা ও স্কুলের পরিবেশ নিয়ে মতামত দেন তারা।  শিক্ষকদের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেন কেউ কেউ।

অভিভাবকদের পক্ষ থেকে জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে শিক্ষা দিলে কোমলমতিরা সহজে সবকিছু অন্তস্থ করে। আনন্দ নিয়ে বিদ্যার্জন করে। আমি মনে করি শিক্ষকদের পাঠদান প্রক্রিয়া আরও উন্নত করতে হবে। গাইড বইকে কম গুরুত্ব দিয়ে টেক্সট বইকে বেশি বেশি পড়ালে শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করবে।’

মো: রাশেদুল ইসলাম নামে আরেক অভিভাবকের অভিযোগ, ছাত্রছাত্রীর তুলনায় স্কুলে শিক্ষক ঘাটতি রয়েছে। যে কারণে প্রতিটি শিক্ষার্থীর পেছনে আলাদাভাবে নজর দিতে পারছেন না তারা।

তিনি বলেন, ‘আমরা আরও মান সম্মত শিক্ষক চাই। যেন  শিক্ষকরা তাদের শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের সাথে সব সময় যোগাযোগ রাখতে পারেন। অভিভাবকদের প্রতিনিয়ত তাদের সন্তানের সম্পর্কে তথ্য দিতে পারেন।’ সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো: জাহাঙ্গির আলম বলেন, ‘ভালো মানের শিক্ষক ও পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা  শতভাগ শিক্ষার্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।’

হোয়াটঅ্যাপে গ্রুপ করে সন্তানদের অনুপস্থিতি, পড়ালেখায় তাদের পারফরম্যান্স নিয়ে অভিভাবকদের আপডেট জানানোর অনুরোধ করেন তিনি। স্কুলে একটি আধুনিক বিজ্ঞানাগার নির্মাণের আবদার করেন তিনি।
সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো:জামিল উদ্দিন সিকদার বনানী মডেল স্কুলকে কলেজ শাখায় উত্তীর্ণ করার আহ্বান জানান।

চলতি বছরে ঢাকা বিভাগের শ্রেষ্ঠ বাংলা শিক্ষক নির্বাচিত হওয়া বনানী মডেল স্কুলের সিনিয়র শিক্ষিকা সুরাইয়া সাত্তারের মতে, স্কুল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও দায়িত্ব সন্তানদের দেখভালের।

তিনি বলেন, ‘সন্তানকে স্কুলে পাঠানো পর্যন্তই অভিভাবকদের দায়িত্ব-কর্তব্য শেষ নয়। সন্তান হোমওয়ার্ক ঠিক মতো করছে কিনা, (স্কুলের বাইরে) কোথায় কার সাথে মিশছে, কোনো খারাপ সঙ্গ তাকে ঘিরে ফেলেছে কিনা – এসব বিষয়ে সার্বক্ষণিক তদারকি ও নজরদারি করতে হবে অভিভাবককে।

ছাত্রছাত্রীদের পেছনে আমাদের স্কুল থেকে সর্বোচ্চ শ্রম দেওয়া হয়। কারণ আমাদের শিক্ষার মান, ও স্কুলের ধারাবাহিক উন্নতি ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর আমরা।     অভিভাবক ও শিক্ষকসহ সবার বক্তব্য শোনার পর সমস্যা ও ত্রুটি দ্রুত সমাধানের নিশ্চয়তা দেন স্কুলের সভাপতি ও অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মীর মোশাররফ হোসেন।

অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সন্তানের পিতামাতা হচ্ছেন সবচেয়ে বড় শিক্ষক। ঘুম থেকে ওঠা শুরু করে ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত সব বিষয় আপনাদের নজরদারি থাকলে কোন সন্তান পথভ্রষ্ট হতে পারে না। জ্ঞান বিতরণে শিক্ষার মান উন্নয়নে আমার স্কুল প্রশাসন ও শিক্ষকরা কাজ করে যাচ্ছে।সমাপনী বক্তব্যে অভিভাবকদের তাদের সন্তানদের প্রতি গভীর মনোযোগ দিতে অনুরোধ করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।

তিনি জানান, ১ অক্টোবর থেকে বনানী মডেল স্কুলে সফটওয়ার ম্যানেজমেন্ট চালু হচ্ছে। যার মধ্যমে ঘরে বসেই আভিভাবকরা তার সন্তানের বিভিন্ন খোঁজখবর পেয়ে যাবেন। নতুন শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী NTRC শিক্ষক নিয়োগ করে থাকেন।বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রয়োজন হলে পার্টটাইম শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্থ করেন তিনি।

শিক্ষক, ১২০ জন অভিভাবক ও বিভিন্ন শ্রেণির আড়াইশ’র বেশি শিক্ষার্থী ছাড়াও সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বনানী মডেল স্কুল এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালনা পর্ষদের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী অনিক, সাধারণ সম্পাদক মো: রেদোয়ানুল হাসান মুরাদ এবং ক্রীড়া সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস।

শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও ফান্ড বৃদ্ধি , মেধাবী ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দান, সামাজিক ও স্বাস্থ্যগত বিপর্যয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদানের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন তারা। প্রতি ৩ মাস পর পর অভিভাবক সমাবেশ অব্যাহত রাখার অনুরোধ রাখেন তারা।

ঊষার আলো-এসএ