ঊষার আলো রিপোর্ট : উত্তরে বইছে বরফ ঝরা বাতাস। ঠান্ডা বাতাসে কাঁপছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। বুধবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তাপমাত্রা গতকাল থেকে কমেছে ১ ডিগ্রি। গতকাল মঙ্গলবার রেকর্ড হয়েছিল ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালে তাপমাত্রা রেকর্ডের তথ্যটি জানিয়েছেন তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ।
সকাল থেকেই সূর্যের মুখ দেখা মিলছে না। হাঁটবাজারে কাগজ, টিউব পুড়িয়ে আগুন পোহাতে দেখা যায়। নিম্নবিত্ত মানুষগুলো শীতবস্ত্রের অভাবে ফুটপাতের দোকানগুলো থেকে সাধ্যমত কিনছে গরমের কাপড়।
শীতের কারণে বিপাকে পড়েছেন বিভিন্ন শ্রেণির খেটে খাওয়া মানুষ। পাথর শ্রমিক, চা শ্রমিক, দিনমজুর থেকে শুরু করে ছোটখাটো যানবাহন ভ্যানচালক মানুষগুলো পড়েছেন বিপাকে। ভোর-সকালে শীতের তীব্র প্রকোপের কারণে কাজে যেতে পারছেন না অনেকে। তবুও পেটের তাগিদে কাউকে নদীতে পাথর তুলতে, কাউকে চা-বাগানে আবার কাউকে দিনমজুরের কাজ করতে যেতে দেখা গেছে। শীতের দুর্ভোগ বেড়েছে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে।
পাথর শ্রমিক জুয়েল, এমরান ও জাকির জানান, ঠান্ডায় নদীর পানি বরফের মত মনে হয়। তারপরেও আমাদের পাথরই জীবিকা। তাই কাজে বেড়িয়েছি। কদিন ধরে নদীর ঠান্ডা পানিতে কাজ করে জ্বর-সর্দিতে ভুগলাম। কিন্তু পরিবারের কথা চিন্তা করে সকালেই পাথর তোলার সরঞ্জাম নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছি। একই কথা জানান কয়েকজন দিনমজুর ও নারী পাথর শ্রমিক।
কবির হোসেন ও হুমায়ুন কবির দুই ফ্রিল্যান্সার জানান, রাতটা বরফ হয়ে ওঠে। তাপমাত্রা যেন শূন্যে চলে আসে। আমাদের রাতে বসে কাজ করতে হয়। কিন্তু শীতের তীব্রতার কারণে বসে থাকাও কষ্টকর হয়ে ওঠে।
এদিকে শীতে প্রকোপে বেড়েছে নানান শীতজনিত রোগ। জ্বর, সর্দি-কাঁশি, শ্বাসকষ্ট, ডায়েরিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।
চিকিৎসকরা বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে রোগীর চাপ বেড়েছে। এমনিতে শীত মৌসুমে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় বাতাসে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। শীতজনিত রোগ হিসেবে সর্দি-কাঁশি, শ্বাসকষ্ট বেশি হয়ে থাকে। আর শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তাই এ সময়টাতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে কিছুটা হলেও সুরক্ষা মিলবে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, গতকালের চেয়ে তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি কমে গেছে। আজ সকাল ৯টায় ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঘন কুয়াশা না থাকলেও উত্তর-পূর্বকোণ থেকে ২ দশমিক ৯ নটিক্যাল গতিতে বয়ে যাওয়া হিমেল বাতাসের কারণে ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে। সামনে আরও তাপমাত্রা কমবে।
ঊষার আলো-এসএ