ঊষার আলো রিপোর্ট : তরুণ সমাজকে সিগারে নিরুৎসাহিত করতে ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে প্রতিটি সিগারেটের দাম কমপক্ষে ২০ টাকা করার দাবি জানিয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
২৬ জুন শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে বিশ্ব মাদকমুক্ত দিবস উপলক্ষে সেভ জেনারেশন বাংলাদেশ ও হেলথ টিভির আয়োজনে বায়োফার্মা লিমিটেড ও হাই-টেক মডার্ন সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালের সৌজন্যে দমাদক প্রতিরোধে জনসচেতনতার অপরিহার্যতাদ শীর্ষক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেছেন।
তিনি বলেছেন, মাদকাসক্তি শুরু হয় ধূমপান দিয়ে। মাদকাসক্তি বন্ধ করতে চাই তাহলে সরকারকে প্রথম উদ্যোগ নিতে হবে ধূমপানবিরোধী আন্দোলনের। সেখানে যেমন একটা বিড়ির দাম ন্যূনতম ৫ টাকা করতে হবে। একটা সিগারেটের দাম কমপক্ষে ২০ টাকা করতে হবে।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে দেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী আন্জুমান্দ আরা বকুল, চলচ্চিত্র অভিনেতা সাদমান সামীর, রক্তনালি বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. আবুল হাসান মুহম্মদ বাশার, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাসরিন সুলতানা মিলি, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট মো. জহির উদ্দিন প্রমুখ।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছে, ‘স্কুল-কলেজের মাস্টাররা লুকিয়ে লুকিয়ে ধূমপান করবে। আর তাদের ছাত্ররা ধূমপান করবে না, এটা আশা করা যায় না। যদি মাদকাসক্তি বন্ধ করতে চাই তাহলে সরকারকে পয়লা উদ্যোগ নিতে হবে ধূমপানবিরোধী আন্দোলনের।’
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘রাস্তায় এত এক্সিডেন্ট তার একটা মূল কারণ এনার্জি ড্রিংকস। এনার্জি ড্রিংকসে অ্যালকোহলের পরিমাণ থাকে অনেক বেশি। কিন্তু বিয়ারে থাকে মাত্র ২-৩% অ্যালকোহল। আর এনার্জি ড্রিংকসে থাকে ২০-২২% অ্যালকোহল। কাজেই তারা সহজে মাতাল হয়। টেক্সি ড্রাইভাররা, ট্রাক ড্রাইভাররা এনার্জি ড্রিংকস খেয়ে গাড়ি নিয়ে রওনা হয়। এ কারণে বাংলাদেশের রাস্তায় এত বেশি এক্সিডেন্ট হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সর্বপ্রথম উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে। সর্বপ্রথম ধূমপান বন্ধ করতে হবে। ধূমপান হলো মদ্যপানের প্রথম স্টেপ। আমাদের সবার এ ব্যাপারে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেছেন, ‘আমাদের সন্তানদেরকে আমরা যেন সজাগ দৃষ্টিতে রাখি। সভ্য সমাজ সৃষ্টির অপরিহার্য শর্ত মাদকমুক্ত সমাজ।’
ইসলামি চিন্তাবিদ সাইয়েদ কামাল উদ্দিন জাফরী বলেছে, ‘আল্লাহর ভয় এবং ধর্মীয় অনুশাসন সমাজকে মাদকমুক্ত করতে পারে। সুতরাং সবার মাঝে ধর্মীয় অনুশাসনের জন্য সচেষ্ট হতে হবে।’
প্রাবন্ধিক ডা. মো. রাহেনুল ইসলাম নানা তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত সমাজ গড়া এবং মাদকাসক্তদের সামাজিক পুনর্বাসনের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক মতামত ব্যক্ত করে। টোব্যাকো থেকে সরকার ৩৫ হাজার কোটি টাকা আয় করলেও মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ডে ৫০০ কোটি টাকাও খরচ করে না।
(ঊষার আলো- এম.এইচ)