UsharAlo logo
রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খাজনা আদায় রশিদ নেই মণিরামপুরের কোন ভূমি অফিসে

koushikkln
জুন ১, ২০২১ ৩:৫১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মো. মেহেদী হাসান, মণিরামপুর : বসত বাড়ি ও ধানিজমিসহ ৭৮ শতক জমির মালিক মাহমুদকাটি গ্রামের আলী আকবর। ২০০৬ সালে জমির খাজনা দিয়েছেন।
নতুন করে আবার বকেয়া খাজনা পরিশোধ করে অনলাইনে খাজনা পরিশোধের জন্য নিবন্ধন করবেন তিনি। মঙ্গলবার (১জুন) প্রস্তুতি নিয়েছেন যাবেন খেদাপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। তখন খবর পান ভূমি অফিসে খাজনা পরিশোধের রশিদ নেই। রঘুনাথপুর গ্রামের নূরআলম মিন্টু এক আত্মীয়র জন্য জমির দাখিলা কাটাতে সম্প্রতি লোক পাঠিয়েছেন একই ভূমি অফিসে। রশিদ না থাকায় তাকে ফেরত আসতে হয়েছে। রশিদ সংকটে জমির খাজনা পরিশোধ করতে পারেননি চালুয়াহাটি ইউপির লক্ষণপুর গ্রামের শামছুল আলম।
শুধু আলী আকবর, মিন্টু বা শামছুল আলম নয়। খাজনা রশিদ না থাকায় ভূমি অফিসে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন মণিরামপুর উপজেলার হাজার হাজার জমির মালিক। সরকারি হিসেবে গ্রাম পর্যায়ে বসতভিটার জন্য শতকপ্রতি বছরে ১০ টাকা, বাগানের জন্য দুই টাকা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৪০ টাকা করে খাজনা নির্ধারিত। ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষি জমি খাজনামুক্ত থাকলেও অন্য জমিরমত বিক্রিত কৃষিজমি রেজিস্ট্রি করতে হলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সাথে দাখিলার কাগজ সংযুক্ত করতে হয়। এছাড়া জমির নামজারি ও ব্যাংক লোনের জন্য খাজনা পরিশোধের রশিদ প্রয়োজন হয়। তখন জমির মালিকরা খাজনা পরিশোধ করতে ভূমি অফিসের দ্বারস্থ হন। নিত্য ভিড় লেগে থাকে ভূমি অফিসগুলোতে। কয়েকমাস ধরে ভূমি অফিসগুলোতে কর পরিশোধের রশিদ না থাকায় জমির মালিকরা বারবার ভূমি অফিসে যেয়েও খাজনা পরিশোধ করতে পারছেন না। ফলে বিপাকে রয়েছেন এই উপজেলার জমির মালিকেরা। ভুক্তভোগী শামছুল আলম বলেন, বিপদে পড়ে জমি বিক্রি করেছি। কিন্তু খাজনা দিতে না পারায় ওই জমির দলিল করে দিতে পারছিনা। কবে ভূমি অফিসে খাজনা আদায়ের রশিদ বই আসবে তার জবাব জানা নেই কারো। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলে তেমনটি জানা গেছে। এদিকে অনলাইনে জমির খাজনা আদায়ের লক্ষে গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলাব্যাপি প্রচারণা চালাচ্ছে উপজেলা ভূমি অফিস। জমির মালিকদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে নিজনিজ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগাযোগ করতে আহবান করা হচ্ছে। তবে খাজনা আদায়ের রশিদ না থাকায় জমির মালিকগণ বকেয়া খাজনা পরিশোধ করে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন না। খেদাপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব আব্দুস সাত্তার বলেন, ১৫ দিন ধরে খাজনা রশিদ নেই। অনেকে এসে ফিরে যাচ্ছেন। খাজনা আদায় করতে পারছি না। অফিসে বারবার জানিয়েও রশিদ বই পাচ্ছি না। রোহিতা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান লিপটন বলেন, একমাস ধরে খাজনার রশিদ নেই। প্রতিদিন দুই একজন অফিসে এসে ফিরে যাচ্ছেন। চালুয়াহাটি ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শফিক উদ্দীন বলেন, খাজনা রশিদ শেষ। বারবার অফিসে আবেদন করছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত খাজনা রশিদ পাইনি।
মণিরামপুর উপজেলা ভূমি অফিসের নাজীর ফিরোজা আক্তার খাজনা আদায়ের রশিদ বই বিতরণ ও সংগ্রহ করেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলায় ১৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলে ১৩টি ভূমি অফিস আছে। প্রতি অফিসে ১০০ পৃষ্ঠার মাসে তিনটি করে বই লাগে। সেই হিসেবে ৩৫-৪০টি বইয়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমরা বরাবর ২০-৩০টা বই পাই। গত একমাসধরে কোন বই পাচ্ছিনা। যশোর জেলা অফিসেও বই নেই। কবে বই পাব তা বলতে পারছি না।