UsharAlo logo
শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাল দলিল করায় সাব-রেজিস্টারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

usharalodesk
এপ্রিল ৭, ২০২৩ ১১:০৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আরিফুর রহমান, বাগেরহাট : বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় মৃত্যু শয্যায় থাকা এক বৃদ্ধের জমি জাল জালিয়াতির মাধ্যমে লিখে নেওয়ায় দলিল সাব রেজিষ্টারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতের মামলা দায়ের হয়েছে।

বাগেরহাটের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে গত ২৫ মার্চ মামলাটি করেন।

ভুক্তভোগী বৃদ্ধ রণজিৎ কুমার পালের ছেলে বিশ্বজিৎ কুমার পাল। যার পিটিশন মামলা নং ২৫/২০২৩। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য বাগেরহাটের পিবিআই কে নির্দেশনা দিয়েছেন।

জালিয়াতি এ মামলার আসামিরা হলেন, রামপাল উপজেলা সাব-রেজিস্টার নাহিদ জাহান মুনা, উপজেলার গিলাতলা গ্রামের দীনেশ পালের ছেলে ও ইউপি সচিব রতন কুমার পাল, তার পিতা (দলিল গ্রহিতা) দীনেশ চন্দ্র পাল, দলিল লেখক ওড়াবনিয়া গ্রামের সবুজ কুমার মন্ডল, সৈয়দ গালিব জামান (ইশাদী), রতিন কুমার পাল, সনাক্তকারী রীতা রানী পাল।

মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয, গত ৭ ফেব্রুয়ারী রামপাল সাব রেজিস্ট্রার অফিসে বসে ষড়যন্ত্র ও যোগসাজশের মাধ্যমে দলিল গ্রহীতা দীনেশ পালের ছেলে রতন পাল দলিল লেখক সবুজ মন্ডলের মাধ্যমে একটি জাল জালিয়াতি করে দলিলটি করান। অত্যন্ত গোপনীয়তা বজায় রেখে দলিলটি রেজিষ্ট্রি করা হলেও বিষয়টি প্রকাশ হয়ে যায়। এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে দলিল দাতা রণজিৎ কুমার পালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তিনি বার্ধক্য জনিত কারণে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় শয্যাশায়ী। কথা হয় তার ছেলে বিশ্বজিৎ পালের সাথে।

তিনি বলেন, আমার বাবার জমি ইউপি সচিব রতন কুমার পাল ও আমার সৎ মাতা রীতা রানী পাল সাব-রেজিস্টারের সাথে যোগসাজশে ভূয়া দলিল দাতা সাজিয়ে ৮৮ নং গিলাতলা মৌজার এসএ ৬৪০ খতিয়ানের ১৮৪৭ দাগের ০.৯৫ একরের মধ্যে ০.৬০ একর জমি জাল জালিয়াতি করে লিখে নেন। যার দলিল নং ৩৪৪/২০২৩।

তিনি মামলায় উল্লেখ করেন, তার পিতা রণজিৎ কুমার দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী অবস্থায় রয়েছেন। তার স্মৃতি শক্তি ও লোপ পেয়েছে। অথচ তার স্থলে অন্য ব্যক্তির ছবি ও ভূয়া আইডি কার্ড ব্যবহার করে মূল্যবান জমিটি রেজিষ্ট্রি করা হয়েছে। ওই গ্রামের মনোরঞ্জন পাল, তুষার কান্তি পাল ও সুদর্শন বিশ্বাসরা বলেন, রণজিৎ বাবু ৭/৮ মাস মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। তার অবস্থা খারাপ। তাকে বাইরে নেওয়ার মত বা তার বের হওয়ার মত অবস্থায় নেই।

মামলার আসামী ইউপি সচিব রতন পালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবুজ মহরীর সাথে ২ লক্ষ টাকার চুক্তি করে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে দলিল করিয়েছি। সবুজ মন্ডল সব কিছু করেছে বলে স্বীকার করেন। ফলে কথিত দাতা সাজিয়ে ভুয়া আইডি কার্ড ও ভূয়া ছবি ব্যবহার করে দলিল করিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে প্রচার পায়। জানা গেছে ইউপি সচিব রতন পাল মোংলা উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের বিদ্যারবাহন গ্রামের মৃত যতীন্দ্র নাথ মন্ডলের ছেলে জগদীশ মন্ডলকে দাতা বানিয়ে ও ভূয়া আইডি কার্ড দিয়ে জমি দলিল করেন।

এ ঘটনা জানার জন্য সংবাদকর্মীরা জগদীশ মন্ডলের বাড়িতে গেলে সে কৌশলে পালিয়ে যায়।

জমি জাল-জালিয়াতি করে দলিল সম্পাদন ও বাগেরহাটের বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিয়ে রামপাল উপজেলা সাব রেজিষ্টার নাহিদ জাহান মুনা’র কাছে জানতে চাইলে তিনি তার অফিসে বসে ৩৪৪/২৩ নং দলিলটি দেখতে চাইলে তিনি দলিলটি এনে দেখেন, দলিল দাতা ও তার আইডি কার্ড জাল করা হয়েছে। উপস্থিত মহরার সমিতির নেতৃবৃন্দরা ও বিষয়টির সত্যতা পান। এ পর্যায়ে সবুজ জাল জালিয়াতির বিষয়টি স্বীকার করেন।

রামপাল উপজেলা সাব-রেজিষ্টার নাহিদ জাহান মুনা বলেন, সরল বিশ্বাসে আমি জমির দলিল রেজিষ্ট্রি করেছি। আমাকে মিস গাইড করে ভূয়া দাতা ও ভূয়া ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। আমি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবো।