বিনোদন ডেস্ক: বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান বাণিজ্যিক সিনেমায় সাফল্য আগেই পেয়েছিলেন। তবে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দেবদাস চরিত্রের কল্যাণে সমালোচক মহলেও প্রশংসিত হন এ অভিনেতা। ২০০২ সালে মুক্তি পেয়েছিল সঞ্জয় লীলা বানসালির পরিচালনায় ‘দেবদাস’ । ৫০ কোটি রুপির বাজেটে তৈরি সিনেমাটি আয় করেছিল ৯৯ দশমিক ৮৮ কোটি। সে বছর কান চলচ্চিত্র উৎসবেও দেবদাস দেখানো হয়েছিল।
দেশ-বিদেশে দেবদাস চরিত্রে শাহরুখের অভিনয় প্রশংসিত হয়। জাতীয় পুরস্কারে সেরা অভিনেতার স্বীকৃতি পান বাদশাহ। লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসবে সম্প্রতি দেবদাস নিয়ে নতুন তথ্য জানালেন বলিউড বাদশা। এ সিনেমা শুধু তার জন্য সৌভাগ্য বয়ে আনেনি, একটি খারাপ অভ্যাসেও জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে জানান শাহরুখ খান। এই ছবিতে দেবদাস চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে গিয়ে মদপানে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
দেবদাস চরিত্রের জন্য শাহরুখ বেছে নিয়েছিলেন মেথড অ্যাকটিং পদ্ধতি। সেই ধাঁচের অভিনয় করে তার ভালো ও মন্দ দুটোই হয়েছে। শাহরুখ জানিয়েছেন, দেবদাসের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য তাকে বাস্তবে মদ খেতে হয়েছিল।
এমনটা সচরাচর দেখা যায় না। সাধারণত শুটিংয়ে মদপানের দৃশ্যে অভিনেতাকে তা পান করতে হয় না। বোতলে পানি ঢেলে, তার সঙ্গে সফট ড্রিঙ্কস মিশিয়ে শুটিংয়ের জন্য মদ তৈরি করা হয়। তা খেয়েই অভিনয় করেন শিল্পীরা। তবে দেবদাসের বেলায় তা ঘটেনি। শাহরুখ সত্যিই মদ খেয়ে শুটিং করেছিলেন বলে জানান তিনি।
একসময় দেবদাসের শুটিং শেষ হয়ে যায়। অন্য সিনেমায়, অন্য চরিত্রে ঢুকে পড়েন শাহরুখন খান। কিন্তু মদপান ছাড়তে পারছিলেন না তিনি। বলিউড বাদশাহ বলেন, পেশাগত দিক থেকে মদপান আমাকে বিপুল সাফল্য এনে দিয়েছে ঠিকই, তবে শরীরে কুপ্রভাবও ফেলেছে। দেবদাস করার পরই মদপান করতে শুরু করেছিলাম। এটিই এ সিনেমার একমাত্র খারাপ দিক ছিল।
উল্লেখ্য, পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালির আগে ১৯৫৫ সালে শরৎচন্দ্রের এ কাহিনি নিয়ে বলিউডে সিনেমা তৈরি করেন বিমল রায়। তাতে দেবদাসের চরিত্রে ছিলেন দীলিপ কুমার। পারু চরিত্রে ছিলেন সুচিত্রা সেন আর চন্দ্রমুখী হন বৈজয়ন্তীমালা। আর শাহরুখ অভিনীত দেবদাসে পারু চরিত্রে অভিনয় করেন সাবেক বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়া রাই, চন্দ্রমুখী চরিত্রে ছিলেন মাধুরী দীক্ষিত ।
এদিকে দীলিপ কুমার অভিনীত দেবদাস থেকে অনুপ্রেরণা নিশ্চয়ই নিয়েছিলেন শাহরুখ খান। তবে নিজের দেবদাসকে আলাদা করার জন্য সচেতন প্রয়াস ছিল তার।
শাহরুখ বলেন, ‘আমি চাইনি দর্শক এ চরিত্রকে ভালোবাসুক। তাকে ঘৃণা করুক— এটাও চাইনি। প্রত্যেক প্রেমিকার থেকে পালিয়ে বেড়ানো এই মদ্যপ চরিত্রকে কেউ পছন্দ করুক, সে চেষ্টাও করিনি। আমি এ চরিত্রকে অনেকটা রহস্যময় রেখেছিলাম।’
ঊষার আলো-এসএ