UsharAlo logo
বুধবার, ৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাইকগাছায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর আঘাতে ঘর-বাড়ি, ঘের ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি

pial
অক্টোবর ২৫, ২০২২ ৪:৩০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মোঃ আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা (খুলনা) : পাইকগাছায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর আঘাতে বড় ধরণের কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
এবারই প্রথম সুরক্ষিত ছিল ওয়াপদার বেঁড়িবাঁধ। তবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ২০৭ টি কাঁচা ঘর-বাড়ি, ১২২ টি মৎস্য ঘের ও ১৮৭ হেক্টর জমির কৃষি ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে নিরুপণ করা হয়েছে।

বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া মানুষ বুধবার সকালের মধ্যে ঘরে ফিরে গিয়েছে। মহান আল্লাহর অশেষ কৃপা, সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ ও সকলের সহযোগিতা থাকায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর আঘাতে বড় ধরণের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছেন। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সোমবার দিনভর বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়া বহে।

দুপুরের পর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত প্রচন্ড বৃষ্টির সাথে সাথে ঝড়ের গতিও বাড়ে। এদিকে ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানী রোধে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। স্বেচ্ছাসেবক এর দায়িত্বে নিয়োজিত রাখা হয় দুই হাজার সিপিপি সদস্যকে। সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি দুর্যোগ প্রতিরোধে কাজ করে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৫০জন জনবল। প্রস্তুত রাখা হয় ১০৮টি আশ্রয়কেন্দ্র।

সন্ধ্যার আগেই ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রত্যন্ত এলাকার দুর্গত মানুষকে নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার সবধরণের ব্যবস্থা করেন স্থানীয় প্রশাসন। প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী ৩হাজার ৩৪৭ জন মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়। সন্ধ্যায় উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার ইকবাল মন্টু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে আশ্রয় নেওয়া দুর্গত মানুষের মাঝে শুকনো খাবারসহ অন্যান্য সামগ্রী প্রদান করেন।

দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসনের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি থাকায় দুর্যোগে একদিকে যেমন বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি অপর দিকে মানুষের কোন দুর্ভোগ হয়নি। তবে সারাদিন বিদ্যুৎ না থাকায় মানুষের কিছুটা ভোগান্তি হয়। এবারের দুর্যোগ মোকাবেলায় সবচেয়ে বড় সফলতা এলাকার কোথাও কোন বেঁড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। অথচ এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বেঁড়িবাঁধ ছিল ৩০কিলোমিটার। এর আগে এমন কোন দুর্যোগ নাই যে বেঁড়িবাঁধ ভেঙ্গে এলাকা প্লাবিত হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার জানান অন্যান্য দুর্যোগের ন্যায় এবারের দুর্যোগে এলাকার নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পায়নি, পাশাপাশি বেঁড়িবাঁধ গুলো আগে ভাগেই মেরামত করা ছিল, এছাড়া জোয়ারের সময় বাতাসের গতিবেগ অনেকটা কমে যায় এর ফলে আমাদের বেঁড়িবাঁধ গুলো সুরক্ষিত ছিল। উপজেলা কৃষি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান ১৮৭ হেক্টর জমির কৃষি ফসল আংশিক ক্ষতি হয়েছে যার বেশিরভাগ আমন ফসল।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা টিপু সুলতান জানান ১২২টি চিংড়ি ঘেরের কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান দুর্যোগে আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ছিল যার কারনে কোন মানুষের দুর্ভোগ হয়নি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান আমরা প্রতিটি এলাকাকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে এলাকা ভিত্তিক সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলাম। মহান আল্লাহর অশেষ কৃপা ও এলাকার জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, রেড ক্রিসেন্ট ও সিপিপি সহ এলাকাবাসীর সর্বাত্বক সহযোগিতা থাকায় দুর্যোগ প্রতিরোধে একদিকে যেমন কাজ করতে সহজ হয়েছে অপরদিকে দুর্যোগে বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী এ কর্মকর্তা।

(ঊষার আলো-এফএসপি)