বাগেরহাট প্রতিনিধি : বিশ্ব মহামারি করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে বাগেরহাট জেলায় শনিবার সকাল থেকে একযোগে সিনোফার্মার টিকাদান কর্মসুচি শুরু করা হয়েছে। জেলায় মোট ৭৮টি কেন্দ্রে এ টিকদান কর্মসুচি পালন করা হচ্ছে।
আজ(শনিবার) সকালে জেলার ৯ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ও মোংলা পৌরসভায় করোনা ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। এ কর্মসুচি সকাল ৯টা থেকে বিকেলে ৩টা পর্যন্ত চলবে। ২৫ বছর বয়সী যে কেউ জাতীয় পরিচয় পত্র নিয়ে আসলে টিকা গ্রহন করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন জেলার শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সিভিল সার্জন ডাঃ কেএম হুমায়ুন কবির।
এদিকে, বৃষ্টি উপেক্ষা করে নানা বয়সী মানুষ টিকা নিতে আসছেন। সারিবদ্ধ হয়ে স্বাস্থ্য বিধি মেনে করোনার টিকা নেয়ায় বেজায় খুশি টিকা গ্রহনকারি মানুষেরা। টিকা গ্রহিতা হালিমা বেগম ও তার স্বামী নির্মান শ্রমিক কিবরিয়া বলেন, বাড়ির দোরগোড়ায় করোনা টিকা কার্যক্রম শুরু করায় আমাদের উপকার হয়েছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে এসে নিরিবিলি পরিবেশে টিকা নিয়েছি। এর আগে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে গিয়ে লাইনে দাড়িয়ে অতি কষ্টে অনেকে টিকা নিয়েছেন। এবার ওয়ার্ড পর্যায়ে টিকা দেয়ায় সাধারণ মানুষের সুবিধা হয়েছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোছাব্বেরুল ইসলাম শনিবার দুপুরে বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নের সুবিধামত স্থানে আমরা টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করেছি। যে ইউনিয়নবাসীর জন্য যেখানে করলে সুবিধা হয় সেখানেই টিকাদানের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। সুষ্ঠ ও স্বাভাবিকভাবে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম পুলিশ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্কাউট সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ সদস্য, সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরাও ইউনিয়ন পর্যায়ে টহল দিচ্ছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাও টিকাদান কেন্দ্র পরিদর্শণ করেছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।
তবে টিকাদান বিষয়ে বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির বলেন, সকল শ্রেনী পেশার মানুষের সুবিধার্তে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা প্রদানের কার্য্যক্রম শুরু করা হয়েছে। শনিবার জেলায় ৭৮টি কেন্দ্রে আমরা ৪৫ হাজার মানুষকে সিনোফার্মার ভ্যাকসিন প্রদান করব। তবে যদি কোন কেন্দ্রে নির্ধারিত লক্ষমাত্রার থেকে বেশি টিকা গ্রহিতা আসেন, তাদেরকেও দেওয়ার জন্য আমাদের টিকার মজুদ রয়েছে। এ জন্য ৪৫ হাজার টিকার লক্ষ মাত্রার বিপরীতে আমরা ৬০ হাজার ৮০০ সিনো ফার্মার টিকার মজুদ রেখেছি।
তিনি আরও বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে একদিনের এই টিকাদান কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। এটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে রুট লেভেলে টিকা দানের সম্ভাব্য প্রতিবন্ধকতা আমরা চিহ্নিত করতে পারব। যার ফলে পরবর্তীতে সফলভাবে এই টিকাদান কার্যক্রম সম্পন্ন করা স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য সহজ হবে। বাগেরহাট জেলায় বর্তমানে টিকাদান কার্যক্রম শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহে ৬দিন জেলা সদর হাসপাতাল ও জেলার ৯টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চলমান রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে বাগেরহাটে ৪০ হাজার ৫০০ জন মানুষকে দুই ডোজ টিকা দেওয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। ১ লাখ ৭০০ মানুষকে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রমের জন্য আমাদের বর্তমানে ১৮ হাজার টিকার মজুদ রয়েছে।
(ঊষার আলো-আরএম)