UsharAlo logo
রবিবার, ১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মোংলা বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের গতিশীলতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা

ঊষার আলো ডেস্ক
জুলাই ৫, ২০২৩ ৪:৩৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মোংলা বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বন্দর ব্যবহারকারীদের সাথে মতবিনিময় সভা ৫ জুলাই (বুধবার) দুপুরে খুলনার হোটেল সিটি ইনের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মীর এরশাদ আলী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চেয়ারম্যান বলেন, মোংলা বন্দর খুলনার অন্যতম শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল তথা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই বন্দরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর পর মোংলা বন্দরে আমদানি-রপ্তানির চাপ বেড়েছে। সময়ের সাথে বেড়েছে গাড়ি আমদানি। তিনি আরও বলেন, বন্দর উন্নয়নে ৬ হাজার ১৪ কোটি ৬১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ‘আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট’ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পের আওতায় ১২টি কম্পোনেন্টের মধ্যে রয়েছে বন্দর জেটিতে ১ ও ২ নম্বর কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, কনটেইনার হ্যান্ডলিং ইয়ার্ড নির্মাণ, কনটেইনার ডেলিভারি ইয়ার্ড নির্মাণ, ইয়ার্ড শেড, নিরাপত্তা দেয়াল অটোমেশন ও অন্যান্য অবকাঠামোসহ বন্দরের সংরক্ষিত এলাকা সম্প্রসারণ, সার্ভিস ভ্যাসেল জেটি শেড ও পোর্ট রেসিডেনশিয়াল কমপ্লেক্স, কমিউনিটি সুবিধাদি নির্মাণ, ইকুইপমেন্ট ইয়ার্ড, ইকুইপমেন্ট শেড ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ এমটি পুল নির্মাণ, সিগন্যাল রেড ক্রসিং ও ওভারপাস নির্মাণ, বিনোদন ব্যবস্থাসহ বাঁধ নির্মাণ এবং ৫টি হারবার ক্রাফট কেনা হচ্ছে। এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে ২০২৭ সালের মধ্যে মোংলা বন্দর হবে স্মার্ট বন্দর।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন মো. আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এস কে আফিল উদ্দিন এমপি, মোংলা কাস্টম হাউজের কমিশনার মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান, মোংলা বন্দরের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ শাহীন মজিদ ও পরিচালক (ট্র্যাফিক) কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মেহেদী। অনুষ্ঠানে খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম নজরুল ইসলাম, বিজেএর চেয়ারম্যান শেখ সৈয়দ আলী, বিএফএফইএ’র সহসভাপতি শেখ আব্দুল বাকী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মতবিনিময় সভায় মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী, ব্যবসায়ী, বিজেএ, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি, বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স এ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জানানো হয়, মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নে অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। বন্দরের ড্রেজিং ব্যবস্থা উন্নয়নে প্রায় ৭৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই প্রকল্পে বন্দরের পশুর চ্যানেলের ইনার বারে জয়মণি ঘোল থেকে বন্দর জেটি পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার ড্রেজিং করা হচ্ছে। চ্যানেলটির ড্রেজিংয়ের কাজ শেষ হলে ৯ দশমিক ৫০ মিটার থেকে ১০ মিটার গভীরতার কনটেইনারবাহী জাহাজ সরাসরি জেটিতে ঢুকতে পারবে। বন্দরের কনটেইনার রাখার স্থান বৃদ্ধির জন্য কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া মোংলা বন্দরে অবস্থান করা বিদেশি জাহাজে, বন্দর এলাকার শিল্প অঞ্চলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে ২৪ কোটি ৭২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সারফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট। বন্দর ব্যবহারকারীদের জন্য জরুরি বার্তা সেবা কার্যক্রমের উন্নয়ন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বন্দর চ্যানেলে প্রবেশ করা প্রতিটি জাহাজ তদারকির পাশাপাশি গতিবিধ পর্যবেক্ষণ করা সহজ হবে। পাশাপাশি ৪০১.২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে মোংলা বন্দরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পটির কাজ শেষ হলে বন্দরে চলাচলকারী বিভিন্ন বাল্ক, কনটেইনার, ট্যাংকার ও অন্যান্য জলযান থেকে নিঃসৃত তেল ও পেট্রোলিয়ম বর্জ্যসহ অন্যান্য আবর্জনা সংগ্রহ করা সহজ হবে এবং একই সঙ্গে পশুর চ্যানেল ও বন্দরের আশপাশের নদ-নদীতে বিভিন্ন জাহাজ থেকে নিঃসৃত তেল অপসারণ সহজ হবে। এর ফলে মোংলা বন্দর এলাকায় সামুদ্রিক দূষণ হ্রাসসহ বন্দর ও চ্যানেল এলাকার পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।