UsharAlo logo
বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লকডাউনে সচিবালয়ের কার্যক্রম

usharalodesk
এপ্রিল ১৫, ২০২১ ১১:০৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : সরকার নির্দেশিত কঠোর লকডাউনের মধ্যে বন্ধ সরকারি-বেসরকারি সব অফিস আদালত। সীমিত পরিসরে এর মধ্যেও খোলা রয়েছে সরকারের শীর্ষ প্রশাসনিক দপ্তর বাংলাদেশ সচিবালয়। সীমিত সংখ্যক জনবল নিয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে খোলা রাখতে হচ্ছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, তথ্য অধিদপ্তর (পিআইডি), সচিবালয় ক্লিনিক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি জরুরি ইউনিট, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জরুরি ইউনিট ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
যতোদিন লকডাউন চলবে ততোদিন, বিশেষ করে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এভাবেই কাজ চলবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এসব তথ্য সচিবালয় ঘুরে জানা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী সব ধরণের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও সীমিত পরিসরে এসব দপ্তর খোলা রেখে অতিপ্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম চলছে। সচিবালয়ের সবগুলো প্রবেশপথ বন্ধ রেখে একটি মাত্র প্রবেশ পথে (১ নম্বর গেট) দায়িত্ব পালন করছে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, বন্ধ থাকায় লোকজনের সমাগম একেবারেই কম। জরুরি কাজে যেসব কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা আসছেন তারা তাদের নিজস্ব দপ্তরের পরিচয়পত্র নিয়েই আসছেন। কাজেই কোনও ঝামেলা নেই। এছাড়া সচিবালয় বন্ধ থাকলে তদবিরকারী বা দর্শনার্থীর ভিড় থাকে না। পুলিশ সদস্যরা জানায় কোনও ঝামেলা না হওয়ার এটিও একটি বড় কারণ। তাই কিছুটা রিল্যাক্স মুডে দায়িত্ব পালন করছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সচিবালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনাকালীন জরুরি সেবা দেয়া বিভাগগুলো কেবল খোলা রাখা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে সচিবালয় ক্লিনিক খোলা রাখা হয়েছে করোনা টিকা দেয়াসহ সচিবালয়ের ভেতরে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়িত্ব পালন করছেন; তাদের জরুরি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য। রোস্টার অনুযায়ী চিকিৎসক ও নার্সসহ কয়েকজন স্টাফও আসছেন প্রতিদিন। সচিবালয় ক্লিনিকের শীর্ষ কর্মকর্তা সিভিল সার্জন প্রতিদিন এসে কাজের খোঁজখবর নেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে খোলা রয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ত্রাণ বিভাগ। দেশের বিভিন্ন জেলায় বা বিভিন্ন অঞ্চলে সরকারের জরুরি ত্রাণ সহায়তা বরাদ্দসহ যেকোনও দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করছে এই বিভাগ। সর্বত্রই কর্মকর্তারা আলাদা ডিউটি রোস্টার তৈরি করেছেন। সেই মোতাবেক কাজ করছেন তারা। নিজেও সারাক্ষণ প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত থেকে কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান।
দিনের চব্বিশ ঘণ্টা খোলা থাকছে তথ্য অধিদফতর (পিআইডি)। তথ্য অধিদফতরের একটা বড় অংশ সংবাদ নিয়ে কাজ করার পাশাপাশি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ যেকোনও সিদ্ধান্ত অতিদ্রুত সাধারণ মানুষকে অবহিত করতে এবং তা গণমাধ্যমের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করছে। যার কারণে পিআইডি খোলা রাখার কোনও বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার। চলমান করোনা মহামারিতেও আলাদা রোস্টার অনুযায়ী কর্মকর্তারা নিউজরুমে ডিউটি করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়াও সীমিত পরিসরে খোলা রাখা হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একটি অংশ। সেখান থেকেই রাষ্ট্রীয় সব কাজ এবং সমগ্র দেশের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব। এসময় সীমিত পরিসরে নির্দিষ্ট জনবল নিয়ে কাজ করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জরুরি ইউনিট। রমজানে নানা সমস্যা সমাধান, অভিযোগ গ্রহণ এবং সেবা দিতে রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত সেল।
এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কিছু জরুরি কাজের সুবিধার্থে নির্দিষ্ট সংখ্যক জনবল দিয়ে মন্ত্রণালয়ের একটি ইউনিট সবসময় খোলা রাখতে হয়। এবারও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। এছাড়া সারাদেশের জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে হচ্ছে। যখন যেভাবে প্রয়োজন ও সুবিধা হয় সেভাবেই কাজ করছি। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির সহায়তাও নিতে হচ্ছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সংকটময় এই মুহূর্তে গাজীপুর জেলা প্রশাসন চব্বিশ ঘণ্টা কাজ করছে। সশরীরে উপস্থিতি এড়িয়ে জেলা প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা প্রযুক্তির সহায়তায় যুক্ত হয়ে কাজগুলো করছেন। সমন্বয় বৈঠকগুলো জুমে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এছাড়া রাজধানীঘেঁষা শিল্পঘন জেলা বলে গাজীপুরের গুরুত্ব সবসময়ই বেশি। বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই কাজ করতে হচ্ছে।
জানতে চাইলে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বলেন, করোনা পরিস্থিতিসহ জেলার সার্বিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় জেলার অধীনস্থ সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সমন্বয়ে ডিসি অফিসসহ উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেখানে সীমিত পরিসরের জনবল দিয়ে রোস্টার অনুযায়ী কাজ চলছে। আমি নিজে বিষয়টি সার্বক্ষণিক তদারকি করছি। জেলা প্রশাসনের অন্যান্য সহকর্মীরা এ কাজে সহায়তা করছেন।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ১৮ দফা নির্দেশনার পর ১২ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ১৩ দফা বিধিনিষেধ জারি করা হয়। সংক্রমণ বাড়তে থাকলে গত বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত এই আটদিন সব ধরনের চলাচল সীমিত করে প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করে কঠোর বিধিনিষেধ দেয়া হয়।

(ঊষার আলো-এমএনএস)