UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের পরিচালকের ৭ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

usharalodesk
মার্চ ১৫, ২০২৩ ১২:০৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে বিস্ফোরণের ঘটনায় কারখানাটির পরিচালক পারভেজ হোসেনকে (৪৮) সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছে পুলিশ।বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

চট্টগ্রামের শিল্প পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সুলাইমান বলেন, বিস্ফোরণের মামলার আসামি পারভেজকে মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় জিইসি মোড় থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে তাকে আজ (বুধবার) আদালতে পাঠানো হচ্ছে।

গত ৪ মার্চ সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল কেশবপুর এলাকার সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে বিস্ফোরণ ও আগুনের ঘটনা ঘটে। এতে সাতজন নিহত ও ৩৩ জন আহত হন।

নিহতরা হলেন- লক্ষ্মীপুর কমলনগর এলাকার মহিজল হকের ছেলে সালাউদ্দিন (৩৩), নেত্রকোনার কলমাকান্দা এলাকার খিতিশ রংদীর ছেলে রতন নকরেক (৫০), নোয়াখালীর সুধারাম এলাকার মৃত মকবুল আহমদের ছেলে আব্দুল কাদের মিয়া (৫৮), সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার মৃত বিম রুগার ছেলে সেলিম রিছিল (৩৯), একই এলাকার মৃত ইসমাইলের ছেলে শামসুল আলম (৬৫), সীতাকুণ্ডের জাফরাবাদ এলাকার মৃত আবুল বশরের ছেলে মো. ফরিদ (৩২) ও সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার মৃত মতি লাল শর্মার ছেলে প্রবেশ লাল শর্মা (৫৫)।

বিস্ফোরণের ঘটনায় ৬ মার্চ রাতে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা দায়ের হয়। বিস্ফোরণে প্রাণ হারানো আব্দুল কাদের মিয়ার স্ত্রী রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এতে আসামি করা সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের এমডি মো. মামুন উদ্দিন (৫৫), পরিচালক পারভেজ হোসেন (৪৮), আশরাফ উদ্দিন বাপ্পি (৪২), ম্যানেজার আব্দুল আলীম (৪৫), প্ল্যান্ট অপারেটর ইনচার্জ সামসুজ্জামান শিকদার (৬২), প্ল্যান্ট অপারেটর খুরশিদ আলম (৫০), সেলিম জাহান (৫৮), নির্বাহী পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন, অ্যাডমিন অফিসার গোলাম কিবরিয়া, অফিসার শান্তনু রায়, সামিউল, সুপারভাইজার ইদ্রিস আলী, সানা উল্লাহ, সিরাজ উদ-দৌলা, রাকিবুল ও রাজীবকে।

মামলার এজাহারে বাদী রোকেয়া বেগম উল্লেখ করেন, তার স্বামী ১০-১৫ দিন আগে ফোনে একবার বলেছিলেন, ‘কারখানায় অর্থের অভাবে অভিজ্ঞ এবং দক্ষ কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের ছাটাই করা হচ্ছে। বর্তমানে যারা কাজ করছে তারা অদক্ষ ও অনভিজ্ঞ। আল্লাহ জানে, কখন কী দুর্ঘটনা ঘটে যায়।’ একথা শুনে তারা খুব চিন্তিত ছিলেন। এর মধ্যে ৪ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাত কারণে কারখানার অক্সিজেন কলামে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে বাদী তার স্বামীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে যান। সেখানে তার স্বামী কিছুক্ষণ চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যান।

এজাহারে তিনি আরও উল্লেখ করেন, কারখানা মালিক ও অন্যান্য আসামিরা যথাযথ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। তারা বিপজ্জনকভাবে গ্যাস উৎপাদন, ভর্তি ও সরবরাহ করতেন। তারা তাৎক্ষনিকভাবে দুর্ঘটনা মোকাবিলা করার মতো প্রশিক্ষিত জনবল রাখেননি। এতে করে বিস্ফোরণে তার স্বামীসহ সাতজন মারা যান। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক), ৩৩৭, ৩৩৮ ও ৪২৭ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে সীতাকুণ্ডে বেশ কয়েকটি বড় অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে। গত বছরের ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় অবস্থিত বিএম ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন লাগার ঘণ্টা খানেকের মধ্যে সেখানে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এরপর টানা ৮৬ ঘণ্টা আগুন জ্বলতে থাকে। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ওই দুর্ঘটনায় আশপাশে থাকা ফায়ার সার্ভিসকর্মী ও শ্রমিকসহ ৫১ জন নিহত হন। এছাড়া আহত হন প্রায় দুই শতাধিক। পাশাপাশি ১৫৬টি আমদানি-রপ্তানি কনটেইনার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সবশেষ গত ১১ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সীতাকুণ্ডের ছোট কুমিরা নেমসন ডিপোর পাশে এসএল গ্রুপের মালিকানাধীন ইউনিটেক্স গ্রুপের ভাড়ায় চালিত তুলার গুদামে আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পরদিন সকাল রোববার ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেন।

ঊষার আলো-এসএ