UsharAlo logo
রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুফি গানের এক জাদুকরী রাত

usharalodesk
ডিসেম্বর ২২, ২০২৪ ৫:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বিনোদন ডেস্ক: সুফি সংগীতের কিংবদন্তি পাকিস্তানের ওস্তাদ রাহাত ফতেহ আলী খানের গান শোনার আকাঙ্ক্ষায় দুপুর ২টায় ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলাম। সঙ্গে ছিল জাহিদ আনোয়ার। প্রায় আট ঘণ্টার অপেক্ষার পর যখন তিনি মঞ্চে পা রাখলেন, সঙ্গীতপ্রেমীদের উচ্ছ্বাসে পুরো স্টেডিয়াম গমগম করে উঠল।

পরিবারের ৫০০ বছরের কাওয়ালি ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী এই মহান শিল্পী মঞ্চে এসে প্রথমেই দর্শকদের সালাম জানিয়ে বললেন, ‘বাংলাদেশ, আমি তোমায় ভালোবাসি।’ এরপর বললেন, ‘পাকিস্তান থেকে তোমাদের ভালোবাসায় চলে এলাম।’ এরপর আরও জানালেন, আজ তার ছেলে প্রথমবার বাংলাদেশের মাটিতে এসেছে।

রাহাত ফতেহ আলী তার পরিবেশনা শুরু করেন জনপ্রিয় গান ‘তু না জানে আশপাশ হ্যায় খুদা’ দিয়ে। মুহূর্তেই দর্শকদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে তার সুরের মাদকতা। এরপর একে একে উঠে আসে তার চাচা, কিংবদন্তি নুসরাত ফতেহ আলী খানের অমর সৃষ্টি ‘সাজনা তেরে বিনা’।

এবার আর গ্যালারির চেয়ারে বসে থাকা সম্ভব হলো না। সুরের টানে আমরা উঠে গিয়ে মাঠের সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে গেলাম, যেখানে মানুষের ঢেউ আমাদেরও ভাসিয়ে নিয়ে চলছিল। জাহিদ তো সুরের মাধুর্যে নিজেকে সামলাতেই পারল না। আমিও তেমনই। সেই মুহূর্তে আমরা সবাই যেন সুরের জগতে হারিয়ে গিয়েছিলাম।

যখন তিনি গাইলেন ‘ও রে পিয়া’, তখন পুরো স্টেডিয়াম যেন এক কণ্ঠে পরিণত হলো। তার প্রতিটি গান আর সুরে মিশে গেল হাজারো দর্শকের হৃদয়ের ছোঁয়া।

রাহাত ফতেহ আলী এরপর পরিবেশন করলেন ‘জরুরি থা’, যার প্রতিটি লাইন দর্শকদের আবেগে ভাসালো। যখন তার কণ্ঠে বেজে উঠল, ‘লফজ কিতনি হ্যায় তেরে প্যায়রোসে লিপটে হোঙ্গে’, পুরো স্টেডিয়াম যেন নীরব হয়ে শুধু তার সুরে বিভোর হয়ে রইল।

সবাই যখন আরও জনপ্রিয় কিছু শোনার অপেক্ষায়, তখন তিনি শুরু করলেন বলিউডের বিখ্যাত গান ‘মেরে রসকে কামার’। সুরের মাধুর্যে স্টেডিয়ামজুড়ে এক অভূতপূর্ব আবহ সৃষ্টি হলো। দর্শকদের প্রতিক্রিয়া ও তার গায়কির শক্তি যেন একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছিল।

রাতটি হয়ে উঠেছিল সুর, আবেগ ও ভালোবাসার এক অনন্য উদযাপন। রাহাত ফতেহ আলী খান তার গানের জাদুতে শুধু দর্শকদের মুগ্ধ করেননি বরং তাদের হৃদয়ের গভীরে পৌঁছে গেছেন। এই রাত স্মরণীয় হয়ে থাকবে প্রতিটি উপস্থিত মানুষের জন্য— আমাদেরও।

ঊষার আলো-এসএ