‘আলো আসবেই’ গ্রুপের স্ক্রিনশট ফাঁস হওয়ার পর থেকেই গ্রুপে থাকা তারকাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করছে দেশের শোবিজ অঙ্গন। কেউ কেউ দাবি জানাচ্ছেন তাদের বিচারের আওতায় আনার। বিষয়টি নিয়ে এবার কথা বললেন বর্ষীয়ান অভিনেতা ও নাট্য ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ। তিনি মনে করেন, ‘আলো আসবেই’ গ্রুপে এমন কিছু অপ্রত্যাশিত মন্তব্য উঠে এসেছে, যা ক্ষমার অযোগ্য।
তার কথায়, ‘শিল্পীরা সেই গ্রুপে এমনটা করে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়নি। তারা এমন সব কমেন্ট করেছে, যেটা ক্ষমার অযোগ্য। এসব উক্তি একজন শিল্পীর কাছ থেকে অনভিপ্রেত বলে মনে করি। গরম পানি ঢেলে দাও-এটা একজন শিল্পী বলতে পারে না। যারা এসব উক্তি করেছে, তাদের দায়িত্ব নিজেদেরই নিতে হবে।’
মামুনুর বলেন, ‘আমি শিল্পীদের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন লক্ষ্য করছি, যেটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এটা যে কীভাবে সমাধান হবে, সেটাই বুঝতে পারছি না। আমার মনে হয়, সেই শিল্পীদের উচিত হবে নিজ দায়িত্বে ক্ষমা চাওয়া। তবে এত দিন পরে এই কথাগুলো তুলে আরও বিভাজন সৃষ্টি করা উচিত নয়। যে স্ক্রিনশটগুলো ফাঁস হয়েছে, সেখানে অভিনয়শিল্পীদের ফোন নম্বর দেওয়া ছিল। এর কারণে অনেকে হয়রানির শিকার হচ্ছে। এটাও তো ঠিক নয়।’
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে দমিয়ে রাখতে ছাত্রদের ওপর বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনায় মত্ত ছিল হাসিনাপন্থী তারকারা। সরকার পতনের আগ মুহূর্তেই এসব পরিকল্পনার সুতো বাঁধা হচ্ছিল। চাটুকার খ্যাতি পাওয়া সেসব তারকাদের কাজ ছিল, কারা ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে, আর কারা বিপক্ষে, তা চিহ্নিত করা। বলে রাখা ভাল, ছাত্র আন্দোলন চলাকালে দেশের তারকা অঙ্গন দু ভাগে বিভক্ত হয়।
মূলত ‘আলো আসবেই’ নামের সেই গ্রুপে সরব ছিল আওয়ামীপন্থি তারকারা। তাদের অভ্যন্তরীণ কথা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় উঠে আসে ভয়ংকর সব তথ্য। যেমন, ওই গ্রুপে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর ‘গরম পানি ঢালার’ পরামর্শ দেন অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস। এমনকী দেশের যেসব তারকারা ছাত্রদের পক্ষে ছিলেন, তাদের ওপরেও ছক কষা হচ্ছিল। অনেক তারকারাই সামাজিক মাধ্যমে আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেন। যারা করেছিলেন, তাদের সেই পোস্টের স্ক্রিনশট তুলে ধরে ‘চিনে রাখার’ হুমকিও দেওয়া হয়।
সেই গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ও চিত্রনায়ক রিয়াজ। আরও ছিলেন অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি, তানভীন সুইটি, সোহানা সাবা, অরুণা বিশ্বাস, অভিনেতা সাজু খাদেমসহ আরও অনেকেই।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অন্যান্য তারকাদের মাঝে বেশ উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সামাজিক মাধ্যমে অনেক তারকারা সেই অভিযুক্তদের নিয়ে নিন্দাও প্রকাশ করেন, ধিক্কার জানান।