বিনোদন ডেস্ক: বলিউড অভিনেতা ‘পারফেকশনিস্ট’ আমির খানের সৎভাই হায়দার আলি খানের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করেন অভিনেত্রী ইভা গ্রোভার। বাবা-মায়ের অমতে বিয়ে করলেও বেশি দিন সংসার টেকেনি তার। বড়পর্দায় অভিনয় করলেও ধারাবাহিক জগতের চেনা মুখ তিনি। সম্প্রতি অভিনেত্রীর অতীত জীবন নিয়ে আবার নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে বিনোদন জগতে।
নব্বইয়ের দশক থেকে অভিনয় শুরু করেন ইভা গ্রোভার। তামিল ভাষার ‘কাত্তুমরকরণ’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে। এরপর বহু হিন্দি ছবির পাশাপাশি ভোজপুরি ও মারাঠি ছবিতেও অভিনয় করেন এ অভিনেত্রী। কিন্তু ছোটপর্দায় কাজ করেই পরিচিতি গড়ে তোলেন তিনি। বর্তমানে আলোর জগত থেকে নিজেকে দূরেই সরিয়ে রেখেছেন ইভা। গত ২০১৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ইয়ারা সিলি সিলি’ ছবিতে শেষ অভিনয় করতে দেখা যায় তাকে। হিন্দি ছবি হলেও এ ছবির মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন দুই বাঙালি তারকা— পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ও পাওলি দাম।
সম্প্রতি একটি পডকাস্ট শোয়ে নিজের অতীত নিয়ে মুখ খোলেন ইভা গ্রোভার। আমিরের সৎভাইয়ের সঙ্গে তার বৈবাহিক জীবন কত অসহনীয় হয়ে উঠেছিল সে কথা জানান এ অভিনেত্রী।
আমিরের সৎভাই হায়দার আলি খানের সঙ্গে মাত্র ১৮ দিনের পরিচয়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন দুজনে। তবে এ বিয়েতে মত ছিল না ইভার মায়ের। তাই হায়দারের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন ইভা। কিন্তু সেই সংসার সুখের হয়নি। বিয়ের চার দিন পর বুঝতে পারেন যে, ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তিনি। তবু সংসার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন বলে জানান এ অভিনেত্রী।
ইভা ভেবেছিলেন যে, সন্তান জন্ম দিলে তার সংসারে আবার সুখের দিন ফিরে আসবে। বিয়ের দুই বছর পর কন্যাসন্তানের মা হন ইভা। কিন্তু এ দম্পতির মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত পাঁচ বছরের সংসারে ইতি টানেন দুজনে। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন তারা।
বিচ্ছেদের পর কন্যাসন্তানের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আইনি পথে লড়াই করেন ইভা ও হায়দার। কিন্তু সেই লড়াইয়ে হেরে যান ইভা। হায়দারের বোনের কাছে থাকতেন ইভার কন্যা। এক পুরোনো সাক্ষাৎকারে ইভা বলেন, মেয়ের সঙ্গে নাকি দেখাই করতে দেওয়া হতো না তাকে। ইভার সঙ্গে দেখা হলে তার কন্যা অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে ফেলতেন। ১০ বছর নাকি ইভা তার কন্যার মুখ না দেখে দিন কাটিয়েছেন।
ব্যক্তিগত জীবন ভেঙেচুরে গেলেও পেশাগত জীবনে ধীরে ধীরে নিজের পরিচিতি তৈরি করেন ইভা গ্রোভার। ‘রিস্তে’, ‘কোরা কাগজ’, ‘অফিস অফিস’, ‘কুমকুম- এক প্যারা সে বন্ধন’, ‘কারিশমা কা কারিশমা’, ‘শরারত’, ‘বড়ে আচ্ছে লগতে হ্যায়’ এবং ‘টশন-এ-ইশ্ক’-এর মতো বহু হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা যায় ইভাকে।
শুধু ছোটপর্দায় নয়, বড়পর্দায়ও ক্যারিয়ার গড়ে তোলার চেষ্টা করেন ইভা। ‘কৃষ্ণ’, ‘স্মাগলার’, ‘কৃষ্ণ অর্জুন’, ‘শপথ’, ‘আন্টি নম্বর ওয়ান’, ‘ন্যায়দাতা’, ‘মসীহা’র মতো বহু হিন্দি ছবিতে ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। মারাঠি, ভোজপুরি এবং তামিল ছবিতেও অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। কিন্তু তাতে আখেরে কোনো লাভ করতে পারেননি ইভা।
ইভা বলেন, তিনি যখন কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন, তখন তার হাত শক্ত করে ধরেছিলেন বলিউডের ‘ভাইজান’ সালমান খান। ইভাকে যথাসম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।
২০১১ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘রেডি’। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন সালমান এবং তার বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা যায় আসিনকে। এ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন ইভা।
ইভা বলেন, বড়পর্দায় ক্যারিয়ার গড়ে তুলতে ইভাকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সালমান। কিন্তু ইভা তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে এতটাই অশান্ত ছিলেন যে, ক্যারিয়ারের দিকে নজর দেওয়ার মতো মানসিক অবস্থা ছিল না তার।
টেলিভিশনের জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘বিগবস’-এর সঞ্চালকের ভূমিকায় দেখা যায় সালমানকে। ইভার দাবি— সেই শোয়েও তাকে অংশগ্রহণ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন অভিনেতা। কিন্তু ইভা তা ফিরিয়ে দেন। ইভা বলেন, সালমান আমায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, আমি যদি ‘বিগবস’-এ অংশগ্রহণ করি, তবে ওই শোয়ে যেন বেশি সময় থাকতে পারি সেদিকে খেয়াল রাখবেন তিনি। আমাকে এ প্রতিশ্রুতিই দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আমি তার প্রস্তাব শুনেও ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।
ঊষার আলো-এসএ