UsharAlo logo
শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

সাড়ে ৪ মাস পর লাশ উত্তোলন; স্বামী মশিয়ারের শাস্তির দাবি

usharalodesk
মে ৩১, ২০২১ ৮:১৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মোঃ আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা : মৃত্যুর প্রায় সাড়ে ৪ মাস পর কবর থেকে গৃহবধু রোকাইয়া সিদ্দিকা রানীমা (২২) এর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ শাহরিয়ার হকের উপস্থিতিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লাশ উত্তোলন পূর্বক ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। হতভাগী রানীমা পাইকগাছা উপজেলার কালুয়া গ্রামের মোঃ রফিকুল সরদারের মেয়ে। দিনমজুর পিতা রফিকুল মেয়ে রানীমা’কে ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর একই এলাকার কামরুল সরদারের ছেলে মশিয়ার সরদার (২৭) এর সাথে বিবাহ দেয়। বিবাহের পর রানীমা’র গর্ভে একটি পুত্র সন্তান হয়। যার বর্তমান বয়স (৪) বছর। স্বামী মশিয়ার এলাকায় বখাটে ও মাদকাসক্ত হিসেবে পরিচিত। সে নানাভাবে স্ত্রী রানীমা’কে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। একপর্যায়ে ১৮ জানুয়ারী ২০২১ ইং তারিখ গভীর রাতে বসতবাড়ীর পুকুর থেকে রানীমা’র ভাসমান মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। কোন ময়নাতদন্ত ছাড়াই রানীমা’কে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় রানীমা’র পরিবারের সন্দেহ হয় স্বামী মশিয়ার রানীমা’কে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর পানিতে ডুবে মারা গেছে বলে প্রচার করে। তবে এ ঘটনায় ওই সময় কোন মামলা হয়নি বলে জানা যায়। এরপর মৃত্যুর পর স্বামী মশিয়ার রানীমা’র বিবাহিত ছোট বোনকে বিয়ে করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মশিয়ার ১১/০৪/২০২১ ইং তারিখে শ্যালিকাকে শ্বশুরবাড়ী পৌছে দেয়ার কথা বলে বাড়ী থেকে সাথে করে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে অজ্ঞাত একটি বাড়িতে ২ দিন আটকে রেখে মশিয়ার তাকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের চিত্র ভিডিও ধারণ করে। এ ঘটনায় ভিকটিম ধর্ষিতার পিতা রফিকুল বাদী হয়ে মশিয়ারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে। যার নং- ২৩, তাং- ২৪/০৪/২০২১ ইং। এ মামলায় থানা পুলিশ মশিয়ারকে গ্রেফতার করে। এরপর এলাকাবাসী রানীমা’র রহস্যজনক মৃত্যু ও তার বোনের ধর্ষণ ঘটনায় মশিয়ারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকায় মানববন্ধন করে। পরে পিতা রফিকুল বাদী হয়ে মেয়ে রানীমা’কে হত্যার অভিযোগ এনে মশিয়ারসহ ৫ জনকে আসামি করে পাইকগাছা সিনিয়র জুডিসিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করলে মামলাটি পাইকগাছা থানায় এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। যার নং- ৫, তাং- ০৫/০৫/২০২১ ইং। এ মামলায় রানীমা’র লাশ উত্তোলন পূর্বক ময়নাতদন্তের জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাপস কুমার দত্ত আদালতে আবেদন করলে মামলাটি সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনটি বিজ্ঞ আদালতে মঞ্জুর হয়। আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক ভিকটিম রোকাইয়া সিদ্দিকা রানীর লাশ উত্তোলনের জন্য খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন মোঃ শাহরিয়ার হককে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে লাশ উত্তোলনের সময় উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দেন। সোমবার সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার হক, মেডিকেল অফিসার তাজুল ইসলাম ও ওসি (অপারেশন) স্বপন কুমার রায় এর উপস্থিতিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই তাপস দত্ত রানীমা’র লাশ উত্তোলন পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ সময় এসআই তাকবীর হোসেন ও এসআই বন্দনা পাল সহ থানা পুলিশের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। রানীমা’র লাশ উত্তোলন হচ্ছে এমন খবর পেয়ে এলাকার শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে চলে আসে এবং সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক রানীমা হত্যার বিচার চান। উল্লেখ্য, সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে উশৃঙ্খল ছেলে মশিয়ারের অপকর্মের কোন দায়ভার পরিবার বহন করবে না মর্মে তার পিতা কামরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করেন।

(ঊষার আলো-এমএনএস)