UsharAlo logo
শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কমছে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম, সোমবার ঘোষণা

usharalodesk
জুন ১৯, ২০২১ ১:৫১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : দু’দফা দামবৃদ্ধির পাবার পর এবার দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। বিশ্ববাজারে বড় দরপতন হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে তারা। দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম নির্ধারণের দায়িত্বে থাকা সংগঠনটি।
আগামী সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানিয়েছে বাজুস।
সূত্রটি বলেছে, দেশে স্বর্ণের দাম বাড়া বা কমা নির্ভর করে বিশ্ববাজারের ওপর। বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। ঠিক তেমনি বিশ্ববাজারে দাম কমলে দেশের বাজারেও তা কমে যায়। বাংলাদেশে সর্বশেষ স্বর্ণের দাম সমন্বয় করার পর বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১০০ ডলারের ওপরে কমে গেছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানো হবে।
সূত্রটি আরও বলেছে, বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম যে হারে বেড়েছে, তাতে বাজুস চাইলে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত কমাতে পারে। তবে স্বর্ণের দাম কী পরিমাণে কমানো হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবে কার্যনির্বাহী কমিটি। এক্ষেত্রে কমিটি সোমবার বিশ্ববাজারের চিত্র দেখে স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দেবে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এপ্রিল ও মে মাসের প্রায় পুরোটা সময়জুড়ে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ছিল। বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বেড়ে যাওয়ায় মে মাসে দেশের বাজারে ২’দফায় ভরিতে স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ৩৭৪ টাকা বাড়ায় বাজুস। সর্বশেষ গত ২৩ মে থেকে স্বর্ণের নতুন দাম কার্যকর হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, বর্তমানে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণ ৭৩ হাজার ৪৮৩ টাকা, ২১ ক্যারেটের স্বর্ণ ৭০ হাজার ৩৩৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ ৬১ হাজার ৫৮৪ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ৫১ হাজার ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
স্বর্ণের এই দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে ওই সময়ে বাজুস বলে, করোনার কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সঙ্কট ও নানা জটিল সমীকরণের কারণে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের মূল্য বেড়েছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট বন্ধ থাকা, আমদানি পর্যায়ে শুল্ক জটিলতা (উপকরণ কর রেয়াত) ও নানা ধরনের দাফতরিক জটিলতার কারণে গোল্ড ডিলাররা স্বর্ণের বার আমদানি করতে পারছে না। তাছাড়া চাহিদার বিপরীতে যোগান কম থাকায় দেশীয় বুলিয়ান/পোদ্দার মার্কেটেও স্বর্ণের মূল্য বেড়েছে। এ কারণে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশে যখন স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে তখন বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ১৮৮১ ডলার। সর্বশেষ গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমে প্রতি আউন্সের দাম ১৭৬৪ ডলারে নেমে আসে। এ হিসেবে বাংলাদেশে সর্বশেষ স্বর্ণের দাম সমন্বয় করার পর বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১১৭ ডলার কমেছে।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের এই দাম কমার চিত্র তুলে ধরা হলে বাজুস সভাপতি এনামুল হক খান বলেন, বিশ্ববাজারের স্বর্ণের দাম কমার বিষয়টি আমরা দেখেছি। আমরাও দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমাবো। আগামী সোমবার স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দেয়া হবে।
দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কতটা কমতে পারে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, বিশ্ববাজারের সঙ্গে স্বর্ণের দাম সমন্বয়ের ক্ষেত্রে আমাদের একটি ফর্মুলা রয়েছে। সেই ফর্মুলা অনুযায়ী দাম কমানো হবে।
এদিকে, বিশ্ববাজারের চিত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়েছে। ১ সপ্তাহেই আউন্স প্রতি স্বর্ণের দাম ১শ’ ডলারের ওপরে কমে গেছে। ২০২০ সালের মার্চের পর এই প্রথম ১ সপ্তাহে স্বর্ণের দামে এতো বড় পতন হল। এর মাধ্যমে স্বর্ণের দাম ২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।
গত সপ্তাহের শুরুতে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের মূল্য ছিল ১৮৭৭ ডলার। যা সপ্তাহ শেষে কমে দাঁড়িয়েছে ১৭৬৪ দশমিক ২১ ডলারে। ফলে ১ সপ্তাহে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম কমেছে ১১২ দশমিক ৭৯ ডলার বা ৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ। আর মাসের ব্যবধানে কমেছে ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
স্বর্ণের পাশাপাশি গেল সপ্তাহে রূপা ও প্লাটিনামের বড় দরপতন হয়েছে। এর মধ্যে সপ্তাহের ব্যবধানে ধাতু প্লাটিনামের দাম কমেছে ১০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স প্লাটিনামের দাম দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৪ ডলার।
আর এক দামি ধাতু রূপার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ৭ দশমিক ৬৩ শতাংশ কমেছে। ফলে প্রতি আউন্স রূপার দাম দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৭৬ ডলার।

(ঊষার আলো- এম.এইচ)