ঊষার আলো রিপাের্ট : খুলনার সদর, সোনাডাঙ্গা ও খালিশপুর থানা এবং রূপসা উপজেলায় করোনা ভাইরাসের নিয়ন্ত্রণে শুক্রবার (৪ জুন) থেকে এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। এসব এলাকার জরুরি সেবা ছাড়া দোকান-পাট, মার্কেট ও শপিংমলও বন্ধ। শহরকেন্দ্রিক সড়কগুলোতে এ বিধিনিষেধ কিছুটা মানলেও একেবারে ভিন্নচিত্র পাড়া-মহল্লার গলিগুলোতে। এমনকি বাস টার্মিনালেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার (৪ জুন) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ সতর্কতা চলবে ১০ জুন পর্যন্ত।
জেলা প্রশাসনের গণবিজ্ঞপ্তির বিধি-নিষেধে বলা হয়েছে, কাঁচাবাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় মুদি দোকান বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান ও নূন্যতম তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেচাকেনা করতে হবে। তবে ওষুধের দোকান সার্বক্ষণিক খোলা রাখা যাবে। হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো পার্সেল অথবা প্যাকেটজাত খাবার সরবরাহ করতে পারবে। সন্ধ্যার পর কোনো রাস্তার মোড়ে বা স্থানে একের অধিক ব্যক্তি অবস্থান করা বা একসঙ্গে চলাফেরা করতে পারবে না।
তবে মহানগরীর নিউ মার্কেট, শেখপাড়া, দোলখোসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজারে দেখা গেল উল্টো চিত্র। জনসমাগমের এই জায়গাতে শারীরিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না, অনেকের মুখে মাস্ক পর্যন্ত নেই।
বিধি-নিষেধের তোয়াক্কা নেই শহরের পাড়া-মহল্লার ওলি-গলিতেও। গলিগুলোর অধিকাংশ দোকান-পাট খোলা থাকছে রাতেও। চায়ের দোকানে আড্ডাও চলছে নিয়মিত। এমনকি বাইরে মাস্ক ছাড়াই চলাফেরা করছে মানুষ, স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না অধিকাংশ মানুষ। কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, ফার্মেসিতেও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব।
সোনাডাঙ্গা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে গিয়েও মিলল বিধিনিষেধ নিয়ে খেয়ালিপনা। এখানে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাসগুলোতে যাত্রী-ওঠা নামা করছে। বিভিন্ন জেলা থেকে পরিবহনে মানুষ খুলনায় আসছেন। বিভাগের সবগুলো রুটেই বাস চলাচল করছে। বাসগুলোতেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মটরশ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বিপ্লব জানান, বাসে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে পরিবহনগুলো সোনাডাঙ্গা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালে আসছে এবং ছেড়ে যাচ্ছে। যাত্রীরা ওঠা-নামা করছেন। তাদের মাস্ক ব্যবহার ও দূরত্ব মেনে চলার জন্য স্টাফরা অনুরোধ করছেন।
বিধিনিষেধে মুখে মাস্কের ব্যবহার অত্যাবশ্যকীয় হলেও নগরীর বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক নেই। কেউ মানছেন না শারীরিক দূরত্ব।
সকালে খুলনা মহানগরীর জনবহুল টুটপাড়া জোড়কল বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বিধিনিষেধ মানছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা।
এদিকে রূপসা উপজেলার রূপসা খেয়াঘাট, আইচগাতি খেয়াঘাট এবং উপজেলার বাজার ও দোকানপাটসমূহে জনসমাগম করা যাবে না। উপজেলা সদরের ওষুধ, কাঁচাবাজার ও খাদ্যসামগ্রীর দোকান ব্যতিত অন্য সকল দোকান ও মার্কেট বন্ধ থাকবে। মাস্ক পরিধানসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
উল্লেখ্য, রূপসা উপজেলায় করোনা সংক্রমণের হার শতকরা ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। কিন্তু অন্যান্য উপজেলাতে এ হার শতকরা প্রায় এক ভাগ।
এছাড়া খুলনা মহানগরীর সদরে সংক্রমণ হার শতকরা ৩৫, খালিশপুরে ২৫ ও সোনাডাঙ্গাতে ১৭ শতাংশ। তবে অন্যান্য স্থানে সংক্রমণের হার নিম্নগামী।
(ঊষার আলো-এমএনএস)