UsharAlo logo
শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপির কর্মসুচিতে পুলিশকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহবান

usharalodesk
জুন ১৪, ২০২৩ ৬:০৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্কঃ অযথা হয়রানী না করে দেশের স্বার্থ রক্ষায় পুলিশ প্রশাসনকে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহবান জানিয়ে খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনা বলেছেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে চলমান যুগপৎ আন্দোলন চলছে। চলমান গনতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হলেও খুলনায় কর্মসুচি আসলেই সরকারের পেটোয়া বাহিনী পুলিশ গায়েবী মামলা দিয়ে, হামলা চালিয়ে, নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অহেতুক হয়রানী করে অরাজকতাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি না করার আহবান জানান। তিনি উল্লেখ করেন খুলনার শান্তিপূর্ণ কর্মসুচিতে অতিউৎসাহী পুলিশের লাঠির আঘাতে মারাত্মক আহত হয়ে খুলনার বিএনপি নেতা বাবুল কাজী মৃত্যুবরণ করেছেন। মহানগর বিএনপি সিনিয়র নেতা ফখরুল আলমের একটি চোখের আলো চিরতরে নিভে গেছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের দুইজন কর্মীকে সমাবেশ থেকে ধরে নিয়ে পুলিশ চুল কেটে দিয়েছে। গতবছর ২৬ মে বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের উপস্থিতিতে চলমান সমাবেশে হামলা চালিয়ে পুলিশ প্রশাসন সমাবেশ পন্ড করে দিয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি ১ হাজারের বেশি চেয়ার ভাঙচুর, বিএনপি অফিসে তান্ডব, অফিসের রক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র তছনছ করেছে। খোদ দলীয় কার্যালয় থেকে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনসহ অনেককে গ্রেফতার করেছিলো। শান্তিপূর্ণ ওই কর্মসুচিতে পুলিশ হামলা করে আবার পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুলসহ ৮শত নেতাকর্মীর নামে মামলা দায়ের করেন।

বুধবার (১৪ জুন) দুপুরে খুলনা মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে অসহনীয় লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক দুর্নীতির প্রতিবাদে  শুক্রবার (১৬ জুন) বিকাল ৩টায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে খুলনা মহানগর বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসুচির অংশ হিসেবে পদযাত্রার কর্মসূচি সফল করতে ও পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা উল্লেখ করেন। এড. মনা উল্লেখ করেন, বর্তমান অবৈধ সরকার, তাদের আমলা প্রশাসন ও দলীয় মন্ত্রী-এমপি-নেতারা দেশটাকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। সীমাহীন লুটপাট ও বিদেশে পাচারের কারণে দেশের সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হবার উপক্রম। গণমানুষের আস্থার সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি শুরু থেকেই সরকারের অনিয়ম দুর্নীতি দুঃশাসন ও লুটপাটের বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে। কর্মসূচি পালন করার মাশুল হিসেবে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম ফ্যাসিবাদী শাসক গুম-খুন-অপহরণ-মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার ও হয়রানির নজিরবিহীন তান্ডব চালিয়েছে এবং এখনও যা অব্যাহত আছে। সারা দেশে ৫০ লক্ষ নেতাকর্মীকে আসামী বানিয়েছে। গুমের শিকার নেতাকর্মীরা আজও তাদের পরিবারের কাছে ফিরতে পারেননি। খুলনা টেলিফোন অফিস, খুলনা রেডিও সেন্টার উড়িয়ে দেয়ার মত কাল্পনিক হাস্যকর ঘটনা সাজিয়ে জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারি হেলালসহ সিনিয়র নেতাদের নামে মিথ্যা গায়েবী মামলা দায়ের করেছে। একইভাবে গত দেড়বছরে মেট্রোপলিটনের ৮টি থানায় শতাধিক গায়েবী মামলা দায়ের করে নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার করেছে। কেন্দ্র ঘোষিত কোন কর্মসুচি আসলেই খুলনায় গণগ্রেফতারে নামে পুলিশ প্রশাসন।

সর্বশেষ গত ১৯ মে খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসুচিতে পুলিশ কিভাবে নির্বিচারে গুলিবর্ষন করেছে তাহা আপনারা দেখেছেন। পুলিশের গুলিতে বিএনপির প্রায় তিনশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। অনেকে শরীরে গুলির স্পীন্টার বয়ে বেড়াচ্ছেন। ওইদিনের কর্মসুচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মহামুদ চৌধুরীকে প্রায় ২ঘন্টা প্রেসক্লাবে অবরুদ্ধ করে রাখে। পুলিশ হামলা চালিয়েছে, নির্বিচারে গুলি করেছে, নেতাকর্মীদের আহত করেছে আবারো সেই ঘটনায় কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালসহ ১৩০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মিথ্যা মামলা করেছে। রাজধানীসহ সারাদেশে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসুচি পালিত হলেও খুলনায় কর্মসুচি আসলেই পুলিশের মারমুখি আচরণ ও কথায় কথায় মিথ্যা মামলার হুমকি অসহনীয় পর্যায়ে পৌছে গেছে। তিনি উল্লেখ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। আবারো তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দলের চেয়ারপারসন সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করেন। একই সাথে  শুক্রবার (১৬ জুন) বিকাল ৩টায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে খুলনা মহানগর বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসুচিতে পুলিশ প্রশাসন পেশাদারিত্ব আচরণ করবেন। হয়রানী না করে কর্মসুচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করতে সহযোগিতা করবে। দেশের মানুষ ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এ জন্যই বিএনপির আন্দোলনের প্রতি তারা সাড়া দিচ্ছে। খুলনার পদযাত্রা সফল করার মধ্য দিয়ে সরকারকে বার্তা দিতে পারবো, অবিলম্বে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিন। তা না হলে দুর্বার আন্দোলনে এ সরকারের পতন হবে। আন্দোলন কর্মসূচি বিএনপির হলেও এই দাবি জনগনের। এই দাবি বেঁচে থাকার, ভাত ও কাপড়ের। এই দাবি নিজের ভোট নিজে দিতে পারার। অর্থনৈতিক মুক্তির।

সংবাদ সম্মেলনে উপিস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, স. ম. আব্দুর রহমান, বেগম রেহেনা ঈসা, কাজী মাহমুদ আলী, শের আলম সান্টু, আবুল কালাম জিয়া, বদরুল আনাম খান, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, একরামুল হক হেলাল, শেখ সাদী, হাসানুর রশিদ চৌধুরী মিরাজ, কে. এম. হুমায়ূন কবীর, হাফিজুর রহমান মনি, আবু মো. মুরশিদ কামাল, কাজী মিজানুর রহমান, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, সৈয়দ সাজ্জাদ আহসান পরাগ, আব্দুর রাজ্জাক, গাজী আফসার উদ্দিন, আনসার আলী, মিজানুর রহমান মিলটন, যুবদলের নেহিবুল হাসান নেহিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিকুল ইসলাম শাহীন, মহিলা দলের এড. কানিজ ফাতেমা আমিন, কাওসারী জাহান মঞ্জু, ছাত্রদলের সৈয়দ ইমরান, সাজ্জাদ হোসেন জিতু প্রমূখ।