UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঁচার আশায় ভিটেবাড়ি ছাড়ছে সাতক্ষীরার বানভাসি মানুষ

usharalodesk
জুন ২, ২০২১ ১০:৩২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড সাতক্ষীরাসহ দেশের উপকূলবর্তী এলাকা। জেলার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের বানভাসি মানুষ ভিটেবাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছে। ডুবে না মরে বেঁচে থাকার আশায় তারা প্রিয় গ্রাম ছাড়ছেন। কেউ-কেউ আবার ভিটেয় পানি ওঠার কারণে পরিবার নিয়ে নৌকায় বসবাস করেছেন। কেউ উঠেছেন ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধে।
প্রতাপনগর ইউনিয়নটি এখন সাগর না সমতলভূমি তা বোঝার উপায় নেই। এরই মধ্যে উদবাস্তু হয়ে এলাকা ছাড়ছেন অসংখ্য পরিবার। গত কয়েক দিন আগে জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করলেও কবে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে তা বলতে পারেন নি। তবে খুব দ্রুত যাতে শুরু হয় সে ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন বলে আশ্বস্ত করেন তিনি। তাই নিরূপায় হয়ে শত-শত আশ্রয়হীন মানুষ জেলা শহরের দিকে যাচ্ছেন। তবে বানভাসি কিছু মানুষ এখনও নিজ ভিটা না ছেড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের উপর ও নদীতে মাছধরা নৌকার উপর পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন।
সবকিছু হারানো উপকূলীয় অঞ্চলের বানভাসি মানুষের বোবা কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। এখন উপকূলবাসীর একটাই দাবি, টেকসই বেড়িবাঁধ। দেশের মানচিত্রে এই জনপদকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের বিকল্প নেই। তাই তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
এলাকাবাসী জানায়, স্থানীয় চেয়ারম্যান কিছু ত্রাণ দিলেও সব মানুষের ভাগ্যে তা জোটেনি। আবার বানভাসি মানুষদের একত্র করে ত্রাণ দেয়ার নাম করে কিছু শুকনো খাবার দিয়ে ছবি তুলে বেসরকারি সংস্থা ও কিছু স্থানীয় নেতা নাম প্রচার করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বাস্তবে অসহায় মানুষের দুঃখ-কষ্ট কেউই বুঝতে চায় না। খাবার পানি, রান্না খাওয়া ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা একেবারে নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় বানভাসি মানুষদের খাওয়া-দাওয়া একবেলা হলেও অন্যবেলায় জুটছে না বলে জানান তারা।

প্রতাপনগরের ইউনিয়নের এক বৃদ্ধা বলেন, আমরা সপ্তাহ খানেক ধরে চিড়া-মুড়ি খেয়ে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি। সহায়-সম্বল ফেলে রেখে বাঁচার তাগিদে এই এলাকায় এসে মানুষের সহযোগিতায় বাঁচার চেষ্টা করছি। আমার অনেক কিছু ছিল, কিন্তু বার বার নদীভাঙনের ফলে আমি এখন নিঃস্ব। সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন আমার মতো অনেকেই। রাতারাতি ঘরবাড়ি ছেড়ে পথের ভিখারি হয়ে গেছে শত-শত পরিবার।
প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন জানান, বর্তমানে ইউনিয়নটির প্রায় ৪০ হাজার মানুষের ভাগ্যে যেন অমাবশ্যার অন্ধকার নেমে এসেছে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ক্ষত না শুকাতেই আবারও ২৬ মে ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে বেড়িবাঁধের কয়েকটি পয়েন্ট উপচে ও বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত এক সপ্তাহ পার হলেও বাঁধটি মেরামতের তেমন কোনও উদ্যোগ নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
(ঊষার আলো-এমএনএস)