ঊষার আলো রিপোর্টঃ দেড় বছর পর আগামী আগামী পরশু রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দিয়ে শ্রেণি পাঠদান শুরু করা হবে। ক্লাস শুরুর দিন থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিদিন পঞ্চম শ্রেণিসহ অন্য একটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আনা হবে। দু’টি শ্রেণির ক্লাসে পাঠদান চলবে তিন ঘণ্টা। প্রত্যেক শ্রেণির ক্লাসে তিন বিষয়ে (বাংলা, গণিত ও ইংরেজি) পাঠদান করানো হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপচিালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম জানান, পঞ্চম শ্রেণিসহ অন্য একটি শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রথম দিন বিদ্যালয়ে আসবে। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা বিদ্যালয়গুলোয় পাঠানো হয়েছে।’
কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশ মেনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাঠদান কার্যক্র চালু করতে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি পাঠদান চলবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সপ্তাহের প্রতিদিনই পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান চলবে বিদ্যালয়ে। পঞ্চম শ্রেণির সঙ্গে সপ্তাহের প্রথম দিন শনিবার চতুর্থ শ্রেণি, রবিবার তৃতীয় শ্রেণি, সোমবার দ্বিতীয় শ্রেণি, মঙ্গলবার প্রথম শ্রেণির পাঠদান করা হবে। সপ্তাহের বাকী দুদিন বুধ ও বৃহস্পতিবার শুধু পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান চলবে।
প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ৯টা ৪০ মিনিট কোভিড-১৯ সচেতনতা বিষয়ে অবহিত করবেন শ্রেণি শিক্ষক। ৯টা ৪০ মিনিট থেকে ১০টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত বিষয় ভিত্তিক ক্লাসে পাঠদান চলবে। এরপর ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত দ্বিতীয় ক্লাস এবং তৃতীয় ক্লাস চলবে ১১টা ২০ মিনিট থেকে ১২টা ৫ মিনিট পর্যন্ত।
শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে নিরাপদ দূরত্ব রেখে নিজ আসনে সীমিত পরিসরে হালকা শারীরিক কসরত (পিটি) অনুশীলন করতে পারে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের শ্বাসকষ্টের অনুভবের বিষয়ে সচেতন থেকে প্রয়োজনে শারীরিক কসরত থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।
শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পরস্পর থেকে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিতে আসন বিন্যাস করে প্রতি বেঞ্চে অন্তত একজন শিক্ষার্থীকে বসাতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে একই শ্রেণিকে একাধিক গ্রুপে ভাগ করে একাধিক কক্ষে ও একাধিক শিক্ষকের সহায়তায় পাঠদান করতে হবে।
পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিকের ক্লাস কার্যযক্রম বন্ধ থাকবে। টিফিন বিরতি ব্যতিত ক্লাস কার্যক্রম সর্বোচ্চ ৩ ঘণ্টার মধ্যে পরিচালিত হবে।
শ্রেণি কার্যক্রমে গ্রুপ ওয়ার্ক ও পেয়ার-ওয়ার্কের মত সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টিকারী শিখন কাজ আপাতত পরিহার করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সকল শিক্ষক মাস্ক পরেই শ্রেণি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করবেন ও শ্রেণিকক্ষে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করবেন।
বিদ্যালয়ে প্রবেশের পর নিরবিচ্ছিন্নভাবে প্রয়োজনীয় পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা শেষে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারিবদ্ধভাবে বিদ্যালয় ত্যাগ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থীরা একত্রে শ্রেণিকক্ষ ত্যাগ করে বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে বিরত রাখতে শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে পর্যায়ক্রমে একের পর এক কক্ষের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় ও সংলগ্ন এলাকা ত্যাগ করতে হবে।
একধিক শিফটে শ্রেণি কার্যক্রমের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী শিফটের পাঠদান সমাপ্তি ও পরবর্তী শিফটের পাঠদান শুরুর মাঝে কমপক্ষে ৩০ মিনিটের বিরতি রেখে বিদ্যালয় ও সংলগ্ন এলাকায় জনসমাগম প্রতিরোধ করতে হবে। একই গ্লাসে যাতে পানি পান থেকে বিরত থাকে সেজন্য শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনে পানির বোতল আনবে।
শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের পাশাপাশি ঘরে বসে শিখি, বাংলাদেশ বেতার ও সংসদ টেলিভিশনে পাঠদান কার্যক্রম, গুগলমিটের মাধ্যমে অনলাইন পাঠদান কার্যক্রম ক্লাস রুটিনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে হবে।
শিক্ষার্থী নিজে বা পরিবারের সদস্যদের কোভিড লক্ষণ ও আক্রান্ত হলে তারা বিদ্যালয়ে আসতে পারবে না, তারা ‘ঘরে বসে শিখি’ এবং অনলাইন পাঠদানে অংশগ্রহণ করবে।
কোনও এলাকায় কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার স্বাস্থ্য অধিদফতর নির্দেশিত বিপৎসীমা পার করলে উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি তাৎক্ষণিকভাবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ও জেলা প্রশাসনকে অবহিত রেখে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় পাঠদান কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর জারি করা নির্দেশিকা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রতিপালন করার নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
ঊআ-বিএস
