UsharAlo logo
সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আম্ফানের ক্ষত কাটেনি রূপসী রানীর

usharalodesk
মে ২৮, ২০২১ ৬:১৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মোঃ মেহেদী হাসান, মণিরামপুর : যশোরের মণিরামপুরের জালালপুর ঘোষ পাড়ায় স্কুল পড়ুয়া এক ছেলেকে নিয়ে মাটির ঘরে থাকতেন শারীরিক প্রতিবন্ধী রূপসী রানী। স্বামী উত্তম ঘোষ দেড় বছর আগে ধার দেনা করে পাড়ি দিয়েছেন মালয়েশিয়ায়। সেখানে এক মাস কাজের পর করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়েন তিনি। তখন থেকে ছেলেকে নিয়ে কষ্টের জীবন শুরু হয় রূপসীর। রূপসীর সেই কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে গত বছরের ভংকর ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। আম্ফান তার মাথা গোঁজার একমাত্র ঠাঁইটি কেড়ে নিয়ে তাকে করেছে গৃহহারা। রূপসীর ঘর ভাঙার এক বছর পার হলেও তার সহযোগীতায় এগিয়ে আসেননি উপজেলা প্রাশাসন। সহযোগীতার হাত বাড়াননি স্থানীয় সমাজপতিদের কেউ। কোন সহযোগীতা না পেয়ে শূণ্য ভিটের পাশে খুপড়িতে আশ্রয় নেন রূপসী। আকিজ জুট মিলে ১৯০ টাকা হাজিরায় কাজ করে ছেলেকে নিয়ে খুপড়িতে সংগ্রামী জীবন এই প্রতিবন্ধী নারীর। সংসারের অভাব ঘুচতে গত তিনদিন ধরে নবম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে গবিন্দ ঘোষকেও কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন অন্যের দোকানে।
শুক্রবার (২৮মে) সকালে কথা হয় রূপসী রানীর সাথে। ভংকর আম্ফানের বর্ণনা দিতে কেঁদে ফেলেন তিনি। রূপসী বলেন, ওই রাতে ছেলেক পাশের বাড়ি নিরাপদে পাঠিয়ে দিয়ে একা ঘরে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ গায় পানি পড়ায় ঘুম ভাঙে। উঠে লেম্প জ্বালিয়ে দেখি টিনের চাল ভেঙে বাঁশ আমার মাথা ও পায়ের পাশে পড়েছে। ভাগ্যিস চাল গায়ে পড়িনি। তখন ঝড় অবস্থায় দৌঁড়ে পাশে ভাসুরের ঘরে আশ্রয় নিই। রূপসী বলেন, কাজ না থাকায় স্বামী বিদেশে কষ্টে আছেন। আমি খোঁড়া মানুষ। কোন রকম আকিজ মিলে কাজ করে পেট চালাই। অভাবে পড়ে তিন দিন আগে ছেলেকে কোটচাঁদপুরে এক দোকানে দিয়েছি। ঘর পড়লি কেউ সাহায্য করিনি। শূণ্য ভিটের পাশে টিন ঘিরে ছোট্ট চালার নিছে থাকছি। শুধু রূপসী নয় ২০২০ সালের ২০ মে ভংকর আম্ফানে মণিরামপুরের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন। গাছ চাপা পড়ে উপজেলার মশ্মিমনগরে পাঁচ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল তখন। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে সরকারিভাবে ২৫ জন ঘর পাচ্ছেন বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। এছাড়া ঝড় পরবর্তী ৭০-৮০ জনকে সরকারিভাবে টিন টাকা দিয়েছিলেন উপজেলা প্রশাসন।
খেদাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হক বলেন, রূপসী রানীসহ যারা আম্ফানে ঘর হারিয়েছেন তাদের ইউএনও বরাবর আবেদন দিতে বলা হয়েছে। আবেদন করলে তারা টিন ও টাকা পাবেন।
মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তরা আবেদন করলে তাদের সহযোগীতা করার চেষ্টা করব।

(ঊষার আলো-এমএনএস)