ঊষার আলো প্রতিবেদক : দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমনে বর্তমানে খুলনা শীর্ষে অবস্থান করছে। গত ১১ জুনের জরিপে, খুলনা বিভাগে সংক্রমনের হার ৩৪.৬৪% গত। যে কারণে খুলনাকে এখন করোনা ভাইরাসের হটস্পট হিসাবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। খুলনা জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভার সিধান্তক্রমে রবিবার (১৩ জুন) হতে খুলনা জেলায় করোনা সংক্রমন বৃদ্ধির প্রক্ষিতে এক সপ্তাহের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বিধিনিষেধের মধ্যে বিকাল ৫টা পর কোন দোকান, শপিংলমল, রেস্তেরা ইত্যাদি খোলা রাখা যাবে না, সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ সকল প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাহিরে বের হয়ে অযথা ঘোরাঘুরি করতে পারবে না, ইজিবাইক চলবে অর্ধেক এবং অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নিয়ে। করোনা সংক্রমন রোধে দেয়া কঠোর বিধি নিষেধ কতটুকু বাস্তবায়ণ হবে নগরীর জুড়ে ? ইতিমধ্যেই সুধীমহলের মধ্যে আলোচনা ঝড় বইতে শুরু করেছে এ বিষয়টি নিয়ে। কারণ করোনার সূচনা হতে আজ পর্যন্ত সরকারি স্বাস্থ্যবিধির ওপর যে দিক নির্দেশনা দিয়েছে তা কোনভাবেই বাস্তবায়িত হচ্ছে না কেবলমাত্র দৌলতপুরবাসীর অসচেতনতার কারণে।
সরেজমিনে, নগরীর পাইকারী-খুচরা বাজার, মাছ-মাংশের দোকান, সন্ধ্যায় বাজার, বিভিন্ন চায়ের দোকানে, পাড়ার মোড়ে মোড় উঠতি বয়সি তরুন জমানো আড্ডা, সর্বত্র মাস্ক ব্যবহারী অনীহা, ইজিবাইক বা মাহেন্দ্র অর্ধেক যাত্রী বহন করার কথা বললেও পূর্ণ যাত্রী বহন, নির্ধারিত সময়ের পড়েও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গুলোতে স্বাস্থ্যবিধির না মেনে প্রার্থনারত হওয়াসহ অসংখ্যক কারণে স্বাস্থ্যবিধির অমান্য হচ্ছে। এলাকার অধিকাংশ জায়গায় জনাসমাগম, সকলেই মাস্ক ছাড়া, নিরাপদ দূরত্ব বাজায় না রেখে ইচ্ছা-স্বাধীন মতো ছুটছে। নেই স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা। তবে ভূলে গেলে চলবেনা স্বাস্থ্যবিধি না মানলে মৃত্যুর ঝুঁকি আছে। স্বাস্থ্যবিধির প্রতি অনীহার কারণে নতুন নতুন করে নগরী জুড়ে শনাক্তের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। তাই সমগ্র খুলনা যেন যেন ঝুলছে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকির মধ্যে। প্রশাসন জেল জরিমানা করে সংক্রমন রোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে, কারণ আমরা নিজেরাই সচেতন নয়। জীবন আগে, জীবিকা নয়। জীবিকা অর্জনে সংক্রমিত হলে সবকিছুই শেষ, শেষ একটি গোটা পরিবার। সুতারাং নাগরিক নেতাদের অভিমত নিজের এবং নিজের পরিবারের কথা ভেবে সকলের আজ হতে শুরু হওয়া সাত দিনের বিধি নিষেধ মেনে চলা।
৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মাদ আলী বলেন, আমাদের দূর্ভোগ আমরা নিজেরাই ডেকে আনছি। জানি মাস্ক আর নিরাপদ দূরত্ব তথা স্বাস্থ্যবিধি না মানলে করোনা সংক্রমনে ঝুঁকি আছে, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে তবুও আমরা এতটুকু সচেতন নয়।আমরা সচেতন হলে বার বার সরকারকে আর লকডাউন বা কঠোর বিধি নিষেধ দিতে হতো না। এর ফলে আমাদের অর্থনীতি দিন দিন দূর্বল হয়ে পড়ছে। সুরাতং জনপ্রতিনিধি হিসাবে বললে চাই আজ হতে যে সাতদিনের বিধি নিষেধ দেওয়া হয়েছে সংক্রমন রোধে তার যথাযথ পালন করা উচিত। সকলের নিজের এবং নিজের পরিবারের কথা ভেবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত বলে আমি মনে করি।
খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেড দেবাশীষ বশাক জানান, সম্প্রতি সময়ে খুলনা করোনা সংক্রমনে শীর্ষস্থানে অবস্থান করার দরুন প্রতিরোধ কমিটি ১৩ জুন হতে সমগ্র খুলনাকে সাত দিনে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। সুতারং সংক্রমনরোধে সরকারী স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীর বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থান নেয়া হবে এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে নিয়মিত অভিযান অব্যহত ছিল এবং থাকবে।
(ঊষার আলো-এমএনএস)