UsharAlo logo
শনিবার, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুলনা নগরীর পানি সংকট নিরসনে নাগরিকদের ১০ দফা দাবি

koushikkln
সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২ ৪:০৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : খুলনা মহানগরীর ৫ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রান্তিক ও সাধারণ মানুষের নিরাপদ পানির দাবিতে ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে নাগরিক সংগঠন  সিএসও নেটওয়ার্ক, শুভশক্তি নেটওয়ার্ক ও সুমাজ নেটওয়ার্ক।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর কারিতাস সেমিনার কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে, বস্তি এলাকার ঘরে ঘরে পানির সংযোগ প্রদান, বস্তি এলাকায় পর্যাপ্ত কমিউনিটি ট্যাপ স্থাপন এবং চাহিদা অনুসারে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, বস্তি এলাকার অচল টিউবওয়েলগুলো সচল করে প্রান্তিক পরিবারের পানির চাহিদা পূরণ, সংকটকালীন সময়ে বস্তি এলাকায় পানি বিতরণ কর্মসূচি চালু, পানির এটিএম বুথ স্থাপন প্রকল্পসহ কার্ড সিস্টেমে মানসম্মত পানি প্রদান, প্রান্তিক পরিবারের জন্য পানির সংযোগ ও সার্ভিস চার্জ সহনীয়করণ, ওয়ার্ড পর্যায়ে পানি ব্যবস্থাপনা কমিটি তৈরি ও মনিটরিং জোরদার, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা স্থায়ী কমিটিতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নারী ও পুরুষ প্রতিনিধিসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সম্পৃক্তকরণ, নিয়মিত পানি পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যসম্মত পানির ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ এবং পানির সংযোগ প্রক্রিয়া সহজকরণসহ আত্মকর্তৃপক্ষের সমন্বয় সাধন।

সংবাদ সম্মেলনে সিএসও নেটওয়ার্কের সভাপতি মিনা আজিজুর রহমান বলেন, খুলনা মহানগরীর বস্তি এলাকায় বসবাসরত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তীব্র খাবার পানির সংকটে ভুগছে। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে প্রান্তিক মানুষদের খাবার পানির জন্য চরম কষ্ট করতে হয়। প্রতি বছরই এই পানির কষ্ট বাড়ছে। মানুষের পানির কষ্ট কমাতে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে খুলনা ওয়াসা। প্রকল্পের মাধ্যমে মধুমতি নদী থেকে পানি এনে তা পরিশোধিত করে নগরবাসীর মধ্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু বস্তি এলাকায় বসবাসরত নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো ওয়াসার পানির সংযোগ থেকে বঞ্চিত। পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন বস্তি এলাকার গভীর নলকূপে পর্যাপ্ত পানি উঠছে না। এতে চরম বিপাকে পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। পানি অব্যবস্থাপনার কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তারা রোগশোকে ভুগছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যগত সমস্যা হচ্ছে, মানসিকতায় সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া অতিরিক্ত সময়, শ্রম ও কাজের ক্ষতি হচ্ছে এবং হচ্ছে অবহেলিত।

তিনি আরও বলেন, খুলনা ওয়াসা আবারো পানির দাম বৃদ্ধি করেছে। পানি সরবরাহকারী এই সংস্থা পানির দাম সর্বোচ্চ ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে। অর্থাৎ আগে যেখানে এক ইউনিট পানির দাম ছিল ৬ টাকা, সেখানে বর্তমানে প্রতি ইউনিট পানির দাম দিতে হচ্ছে ৮টাকা ২০পয়সা। এ যেন মরার ওপর ঘাড়ার ঘা।

সংবাদ সম্মেলনে মিনা আজিজুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, এমনিতেই ঠিকমত পানি পাওয়া যায় না। তার উপর প্রতিনিয়ত পানির দাম বৃদ্ধি করে এবং নয়-ছয়ভাবে পানি সরবরাহ করার পাশাপাশি ভৌতিক বিল প্রদান করে খুলনা ওয়াসা গ্রাহকদের চরমভাবে হয়রানি করছে। এর ওপর ওয়াসা যে পানি সরবরাহ করছে, তা ব্যবহারের উপযুক্ত নয়। পানি দুর্গন্ধ ও ময়লাযুক্ত। বিভিন্ন সময় এ বিষয়ে অভিযোগ করলেও ওয়াসা তা আমলে নিচ্ছে না। তাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এলাকায় পানির সঠিক ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান যে সকল আইন আছে, সেই আইন বাস্তবায়ন করা জরুরি।

সংবাদ সম্মেলনে কেসিরি ৫নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ আলী ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ শামসুদ্দিন আহম্মেদ প্রিন্স অভিযোগ করেন, খুলনা ওয়াসা তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে পানির লাইন নিয়ে গেলেও জনপ্রতিনিধি হিসেবেও তাদের বাড়িতে এখনো ওয়াসার পানি সরবরাহ করা হয়নি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা একেক সময় একেক কথা বলেন বলে তারা সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন, শুভশক্তি নেটওয়ার্ক খুলনার সভাপতি ঝর্না আক্তার বৃষ্টি, সুসমাজ নেটওয়ার্ক খুলনার সভাপতি শরিফ শাকিল বিন আলম, পরিবর্তন খুলনার নির্বাহী পরিচালক এম. নাজমুল আজম ডেভিড, এডভোকেসি এন্ড কেপাসিটি অফিসার (ইআরবি) প্রজক্ট শিরিন পারভীন প্রমুখ।