UsharAlo logo
শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

তালিবান জামানা ফিরতেই আফগানিস্তান জুড়ে আতংক কাটছে না 

koushikkln
আগস্ট ১৮, ২০২১ ১০:৫৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : খবরটা জানা গিয়েছিল ২০২০-র নভেম্বরের গোড়ায়। চাকরি করার ‘অপরাধে’ গজনির এক মহিলা পুলিশকর্মীকে গুলি চালিয়ে খুন করে তালিবান। তার পর তিন জঙ্গি ছুরি দিয়ে তাঁর চোখ উপড়ে নেয়। ওই ঘটনার সময়ও গজনি প্রদেশ আফগান সরাকের নিয়ন্ত্রণে ছিল। আফগানিস্তানে তখনও মোতায়েন ছিল প্রায় ১০ হাজার পশ্চিমী সেনা। রাজধানী কাবুল-সহ প্রায় গোটা আফগানিস্তান এখন তালিবান দখলে। ফলে আগামী দিনে এমন নৃশংসতার ঘটনা আরও দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা আফগান নাগরিকদের অনেকেরই। সূত্র : আনন্দবাজার অনলাইন
এমনই একজন কন্দহরের শেখ কলিমুদ্দিন। আমেরিকার একটি সংবাদপত্র জানাচ্ছে, পেশায় ৗেরকার ওই ব্যক্তি সাফসুতরো থাকতেই পছন্দ করতেন। কিন্তু মে মাসের গোড়ায় দণি আফগানিস্তানে তালিবান তৎপরতা বাড়তেই দাড়ি-গোঁফ রাখতে শুরু করে দেন। কারণ, দু’দশক আগের তালিবান জমানায় দাড়ি কামানোর শাস্তি ছিল অন্তত দেড়শো ঘা বেত।
এলাকার দখল নিয়েই তালিবান মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। উদ্দেশ্য, যাতে গানবাজনা বা সিনেমার মতো ‘অ-ইসলামীয়’ মনোরঞ্জন বন্ধ করা। কলিমুদ্দিনের বাবা এবং ভাইদের সিমকার্ড গিলে ফেলতে বাধ্য করা হয়।
তবে নৃসংশতার নিরিখে মোল্লা দাদুল্লার তুলনায় বর্তমান তালিবান নেতারা কিছুটা পিছিয়ে বলেই মনে করেন অনেক কন্দহরবাসী। দু’দশক আগে স্মৃতি এখনও তাজা সেখানকার অনেক বাসিন্দার মনেই। সে সময় শহরের ফুটবল স্টেডিয়ামে খেলা বন্ধ করেছিল তালিবান। বিচার এবং শাস্তিদানের নামে সেটিকে পরিণত করা হয়েছিল বধ্যভূমিতে। আর অধিকাংশ েেত্রই সেই নৃশংসতার নেতৃত্বে থাকতেন তালিবান কমান্ডার দাদুল্লা। তালিবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের পরেই সংগঠনে স্থান ছিল তাঁর।
সে সময় দাদুল্লা ছিলেন কন্দহর-সহ দণি আফগানিস্তানের ত্রাস। সাধারণ আফগান নাগরিক তো বটেই, তালিব যোদ্ধারাও তাঁর ভয়ে কাঁপত। চুরির মতো ছোটখাটো অপরাধেও নির্দ্বিধায় গলা কাটার শাস্তির নিদান দিতেন। মহিলা এমনকি শিশুদের মৃত্যুদ- হত হামেশাই। এমনকি, পুরো গ্রাম জ্বালিয়ে সব বাসিন্দাকে পুড়িয়ে মারার রেকর্ডও আছে দাদুল্লার। আশির দশকে রুশ ফৌজের বিরুদ্ধে যুদ্ধে একটি পা হারিয়েছিলেন তিনি। তাই আড়ালে অনেকে তাঁকে ‘খোঁড়া দাদুল্লা’ বলে ডাকতেন।
১৯৯৭ সালে কয়েকজন শিশুর মৃত্যুদ-ের ঘটনায় দাদুল্লার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদপে করেছিলেন ওমর, কিন্তু তাঁর নৃশংসতায় পুরোপুরি রাশ টানা সম্ভব হয়নি। ২০০১-সালে আন্তর্জাতিক জনমত উপো করে বামিয়ানের প্রাচীন বৌদ্ধমূর্তি ধ্বংস করা হয়েছিল দাদুল্লারই নির্দেশে। ২০০৭-এর মে মাসে ন্যাটো এবং আফগান সেনার যৌথ অভিযানে মারা যান দাদুল্লা। নৃশংসতার নিরিখে তালিবান নেতা পির আঘাকে অনেকে দাদুল্লার উত্তরসূরি মনে করেন। ২০১৫ সালে দাদুল্লার পরিজনেদের খতম করে খবরে এসেছিলেন তৎকালীন তালিবান প্রধান মোল্লা মনসুরের প্রিয়পাত্র আঘা। কিন্তু ২০১৮-য় ন্যাটোর হামলায় তাঁর মৃত্যু হয়। তার আগে আমেরিকার ড্রোন হামলায় নিহত হন মনসুরও।
কাশ্মীর দ্বিপাকি এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়, নয়াদিল্লির অবস্থানেই সায় তালিবানের কিন্তু এখনও তালিবান ‘চেন অফ কমান্ড’-এ তাঁর উত্তরসূরিদের অনেকেই রয়ে গিয়েছেন বলে আশঙ্কা। দু’দিন আগে কাবুলে চুরির অপরাধে কয়েকজনকে গুলি করে মারার ঘটনায় সেই আশঙ্কা আরও প্রবল হয়েছে। তাই তালিবান অধিকৃত আফগানিস্তান জুড়ে দাড়ি রাখা আর বোরখা কেনার ধূম পড়েছে। তালিবান সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রধান এমানুল্লাহ সামাগনি মহিলাদের শরিয়ত মেনে মহিলাদের শিা ও কাজের অধিকার দেওয়ার কথা বললেও তাতে ভরসা পাচ্ছেন না আম আফগানরা।