UsharAlo logo
শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ধীরে ধীরে রাজধানী ফিরছে চিরচেনারূপে

usharalodesk
এপ্রিল ২২, ২০২১ ১০:২৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার। দ্বিতীয় দফার বিধিনিষেধেও একই চিত্র দেখা গেছে রাজধানীতে। দিন যতই যাচ্ছে রাস্তায় বাড়ছে মানুষের উপস্থিতি। এ যেন প্রথম দফার বিধিনিষেধের পুনরাবৃত্তি।
বিধিনিষেধ চলাকালে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের না হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিল সরকার। যদিও অধিকাংশ মানুষই তা মানছে না। নানা অজুহাতে রাস্তায় বের হচ্ছেন তারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জরিমানা করেও ঘরে রাখতে পারছে না নগরবাসীকে। এতে যে উদ্দেশ্যে এ বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে তার সুফল নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে দ্বিতীয় দফার বিধিনিষেধে রাস্তায় বেড়েছে যানচলাচল। গণপরিবহন ছাড়া রাস্তায় এখন সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। প্রাথমিকভাবে দেখলে মনে হবে, রাজধানীতে বিধিনিষেধ আরোপ করাই হয়নি। গণপরিবহন ধর্মঘট চলছে বলে মনে হবে।
অন্যদিকে বিধিনিষেধ চলাকালেও চরমভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। রাস্তায় বের হওয়া অধিকাংশ মানুষই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। অনেকে মাস্ক পরলেও তা নামিয়ে রেখেছেন থুতনির নিচে।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর প্রগতি সরণী থেকে শান্তিনগর মোড় পর্যন্ত এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
রাস্তায় বের হওয়া লোকজন জানান, তাদের পক্ষে ঘরে বসে থাকা আর সম্ভব নয়। যারা বের হয়েছেন তারা সবাই নিজেকে স্বল্প আয়ের মানুষ দাবি করছেন। তারা বলছেন, এত দিন ঘরে বসে থাকলে তো না খেয়েই মরে যেতে হবে। তাই বেঁচে থাকার জন্য রাস্তায় বের হয়েছেন কাজের সন্ধানে।
পল্টন মোড়ের হোটেল ব্যবসায়ী আবুল হাসান বলেন, এতো দিন তো বাসায়ই ছিলাম। কেউ তো আমাদের সাহায্য করেনি। কেউ তো আমাদের কাছে ত্রাণ নিয়ে আসেনি। আমরা অল্প আয়ের মানুষ, বেশি দিন ঘরে বসে খাওয়া সম্ভব নয়। এছাড়া সামনে ঈদ আসছে, এখন কিছু টাকা আয় না করলে পরিবার নিয়ে কীভাবে ঈদ উদযাপন করব।
তবে অর্থসংকটে বাধ্য হয়ে অনেকে ঘর থেকে বের হলেও ঘোরাঘুরি ও আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় বেড়াতে যাওয়া লোকজনের সংখ্যাও কম নয়।
রামপুরা ব্রিজ থেকে সিএনজি অটোরিকশা করে আজিমপুর বোনের বাসায় যাবেন সাঞ্জিদা খাতুন। বিধিনিষেধের মধ্যে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক দিন বোনের বাসায় যাওয়া হয়নি। এখন তো অনেক মানুষ রাস্তায় যাতায়াত করে আর পুলিশও তেমন কিছু বলে না। তাই এ ফাঁকে বোনের বাসা থেকে ঘুরে আসব বলে বের হয়েছি। আমি স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ঘর থেকে বের হয়েছি।
এছাড়া প্রথম দফার বিধিনিষেধের মতো দ্বিতীয় দফায়ও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার অলি-গলিতে চলছে চায়ের দোকানে আড্ডা ও রাস্তার পাশে বসে কিংবা দাঁড়িয়ে গল্পগুজব।
এদিকে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর অস্থায়ী পুলিশ চেকপোস্টেও দেখা গেছে ঢিলেঢালাভাব। প্রথম দফার বিধিনিষেধের মতো আর কার্যকর ভূমিকা পালন করছে না পুলিশ চেকপোস্টগুলো। এছাড়া বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রমও কমে গেছে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেক মানুষ জরুরি কাজে ঠিকই বের হয়েছে। যারা আগে থেকে জরুরি কাজে বের হবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন তারা মুভমেন্ট পাস নিয়ে বের হচ্ছেন। আর যারা হুট করে জরুরি কাজে বের হয়ে গেছেন তারা মুভমেন্ট পাস নিয়ে বের হতে পারেননি। তবে তারা উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারছেন। কিন্তু আরেক দল যারা জরুরি কাজের বাহানা করে বের হলেও আসলেই তাদের কোনো জরুরি কাজ নেই। এসব লোকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাদের চেকপোস্ট আটকানোর চেষ্টা করছে পুলিশ। এমনকি জরিমানা করে বাসায়ও ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

(ঊষার আলো-এমএনএস)