UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসে বিএনপির কর্মসূচি গ্রহণ : মঙ্গলবার গণমিছিল

koushikkln
ডিসেম্বর ১২, ২০২২ ১০:৫১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) খুলনায় গণমিছিল করবে বিএনপি। বিকেল ৩টায় রেল স্টেশন এলাকায় জমায়েত হবেন দলটির নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে মিছিল শুরু করে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করবে। এরপর দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত পথসভার মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হবে। সোমবার কে ডি ঘোষ রোডে বিএনপি অফিসে অনুষ্ঠিত এক প্রস্ততি সভা থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে ব্যাপক দমন পীড়ন চালায় পুলিশ প্রশাসন। পুলিশের গুলি-টিয়ার সেল নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও হামলায় একজন নিহত এবং শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। গ্রেফতার হন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ সাড়ে চারশ’ জন। এসব ঘটনার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় বিএনপি দেশব্যাপী গণমিছিল ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে।

সোমবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথ প্রস্ততি সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর আহবায়ক শফিকুল আলম মনা। সভা সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু হোসেন বাবু। বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন খান জুলফিকার আলী জুলু, স ম আব্দুর রহমান, সাইফুর রহমান মিন্টু, শের আলম সান্টু, মোস্তফা উল বারী লাভলু, আবুল কালাম জিয়া, বদরুল আনাম খান, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, আশরাফুল আলম খান নান্নু, এনামুল হক সজল, শেখ জাহিদুল ইসলাম, হাফিজুর রহমান মনি, আশফাকুর রহমান কাকন, বেগ তানভিরুল আযম, শেখ শাহিনুল ইসলাম পাখী, মুরশিদ কামাল, ইলিয়াস হোসেন মল্লিক, শেখ আজগর আলী, বিপ্লবুর রহমান কুদ্দুস, সাজ্জাদ হোসেন তোতন, মোঃ হাফিজুর রহমান, আনিসুর রহমান, সুলতান মাহমুদ, এহতেশামুল হক শাওন, মনিরুজ্জামান লেলিন, একরামুল কবির মিল্টন, এস এম মুর্শিদুর রহমান লিটন, জহর মীর, নাজিরউদ্দিন আহমেদ নান্নু, শেখ ইমাম হোসেন, হাবিবুর রহমান বিশ^াস, আরিফুর রহমান, এ্যাড. মোহাম্মদ আলী বাবু, সেলিম সরদার, শেখ আব্দুস সালাম, দিদারুল হোসেন, খন্দকার হাসিনুল ইসলাম নিক, মিজানুর রহমান মিলটন, শামসুল বারিক পান্না, আলী আক্কাস, শ্রমিক দলের খান ইসমাইল হোসেন, কৃষক দলের শেখ আবু সাঈদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের ইউসুফ মোল্লা, ছাত্রদলের সৈয়দ ইমরান, ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মুসা খান, সিরাজুল ইসলাম লিটন, নাসির উদ্দিন খান, মোঃ নজরুল ইসলাম, মোঃ সরোয়ার শিকদার, আসাদুজ্জামান হারুন, মোস্তফা কামাল, বাবু মোড়ল, কাজী ইকরাম হোসেন মিন্টু প্রমুখ।

সভা থেকে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ বানচাল করতে শাসক দল আওয়ামী লীগ দলীয় সন্ত্রাসী ক্যাডারবাহিনী এবং পুলিশ প্রশাসনের সম্মিলিত তান্ডবলীলা, গণগ্রেফতার, গুলি-লাঠিচার্জ-টিয়ারসেল নিক্ষেপে একজন নিহত এবং অসংখ্য আহত হওয়ার ঘটনায় তিব্র নিন্দা জানানো হয়।

সভা থেকে বিএনপির সম্মানিত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ সাড়ে চারশ নেতাকর্মীকে গ্রেফতারের তিব্র নিন্দা এবং অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয়।

সভা থেকে ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চালানো পুলিশের তান্ডবের তিব্র নিন্দা এবং এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। পুলিশ সেখানে সাজানো পাতানো ককটেল উদ্ধারের নাটক মঞ্চস্থ করেছে। সারা দেশ থেকে আগত নেতাকর্মীদের জন্য রান্না করা খাবার লুটপাট করেছে। এমনকি দলীয় কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার সহ অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুটপাট করে নিয়ে গেছে অভিযোগ করে এ ঘটনাকে ইতিহাসে নজিরবিহীন ন্যাক্কারজনক ও মানবতাবিরোধী দাবি করা হয়। একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক সংগঠন বিএনপিকে যেভাবে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়ে দমন করার হীন চেষ্টা করা হয়েছে তার তিব্র নিন্দা জানানো হয়।

সকল বাঁধা বিপত্তি, গণপরিবহ বন্ধ, পথে পথে তল্লাশি, বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগ ক্যাডারদের দফায় দফায় হামলা নির্যাতন, সর্বপরি গণসাবেশের ভেন্যু নিয়ে নানা টালবাহার পরেও গোলাপবাগ মাঠে কর্মসূচি কয়েক লাখ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে সর্বাত্মকভাবে সফল হওয়ায় সর্বস্তরের নেতাকর্মীদেরকে সভা থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানানো হয়। বিশেষ করে নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে খুলনা থেকে অন্তত ১০ হাজার নেতাকর্মী এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়ায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।
সভা থেকে অভিযোগ করা হয়, ঢাকায় বিএনপির কর্মসূচি বানচাল করতে খুলনার পুলিশ প্রশাসন এক সপ্তাহ আগে থেকে তৎপরতা শুরু করে। ৩ ডিসেম্বর (শনিবার) বিকেল থেকে হঠাৎ করেই বিশেষ অভিযানের নামে খুলনার মহানগরী ও জেলার থানায় থানায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িতে ও কর্মস্থলে গণহারে তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ। একই সাথে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ধ্বংসের কল্পিত অভিযোগ এনে গায়েবী মামলা দায়ের হয়। যে সব মামলায় কয়েক শত নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। প্রায় ৮০ জন নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছেন। অন্যরা গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন করতে বাধ্য হয়েছেন। সভা থেকে অবিলম্বে মিথ্যা বানোয়াট এসব গায়েবী মামলা প্রত্যাহার করার জন্য জোর দাবি জানানো হয়। সেই সাথে গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং নিরীহ রাজনৈতিক কর্মীদের অযথ হয়রানি না করার আহবান জানিয়ে বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে পুলিশের অবৈধ আদেশ পালনে যে সব অতি উৎসাহী কর্মকর্তারা তৎপর রয়েছেন, তাদেরকে এক সময় কৃতকর্মের জন্য জবাবদিহি করতে হবে।

সভা থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এবং মহান বিজয় দিবস উদযাপনে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১৩ ডিসেম্বর রাতে জমায়েত এবং দিবসের প্রথম প্রহরে গল্লামারি বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন। ১৪ ডিসেম্বর বেলা ১১ টায় দলীয় কার্যালয়ে বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা এবং দোয়া মাহফিল।
১৬ ডিসেম্বর ভোরে গল্লামারি বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন। বিকেল ৩ টায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে জমায়েত, সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা এবং নগরীতে বর্ণাঢ্য র‌্যালী।
কর্মসূচিসমূহ সফল করতে বিএনপি এবং সকল অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য আহবান জানানো হয়।