ঊষার আলো বিনোদন ডেস্ক : তাজিন আহমেদের মৃত্যুর তিন বছর হলো আজ। রাজধানীর বনানী কবরস্থানে বাবা কামাল উদ্দিন আহমেদের কবরেই চিরনিদ্রায় শায়িত অভিনেত্রী তাজিন আহমেদ। বনানী কবরস্থানের ৯৫৭ নম্বর কবরটি তার বাবার। তাজিন নিজেই বাবার কবরের নাম ফলকটি করিয়েছিলেন। সেখানে বাবার নাম ও জন্ম মৃত্যুর তারিখসহ পরম মমতায় লিখিয়েছিলেন, ‘আব্বু আমার’। সেই কবরে শায়িত হয়েছেন নিজেই। বাবার বুকে ঘুমিয়ে আছেন কন্যা, এই ঘুমের কোনো শেষ নেই।
২০১৮ সালের ২২ মে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় তাজিনের। চোখের দেখায় তিনি না থাকলেও তিনি ফিরে আসেন এদেশের নাটক-বিজ্ঞাপনের নস্টালজিয়ায়। তাকে স্মরণ করেন তার ভক্ত-সহকর্মীরা।
এইতো নিয়তি! শৈশবেই বাবাকে হারিয়েছিলেন অভিনেত্রী তাজিন আহমেদ। প্রাণভরে বাবাকে দেখা, ডাকবার সুযোগ তিনি পাননি। জীবনে বহুবার হয়তো বাবার অভাবে কেঁদেছেন, বাবাকে মিস করেছেন। সেই বাবার সঙ্গে মিলনের বাহক হয়ে এলো মৃত্যু!
তাজিন আহমেদের জন্ম নোয়াখালী জেলায়। কামাল আহমেদ এবং দিলারা জলির কন্যা তাজিন। তার ডাক নাম ছিলো জল। ১৯৯২ সালে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হোন। ছাত্রজীবন থেকেই সাংবাদিকতা করেন তিনি। ১৯৯৪ সালে ভোরের কাগজ ও ১৯৯৭ সালে প্রথম আলোতে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে সাংবাদিকতা করেন। ১৩ বছর সাংবাদিকতায় জড়িয়ে ছিলেন তাজিন।
মা দিলারা জলি রচিত ও শেখ নিয়ামত আলী পরিচালিত ‘শেষ দেখা শেষ নয়’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তাজিন আহমেদের অভিনয়যাত্রা শুরু হয়েছিল। নাটকটি ১৯৯৬ সালে বিটিভিতে প্রচার হয়েছিল। এরপর তিনি অসংখ্য নাটক-টেলিছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন।
অভিনয়ের সাথে তিনি উপস্থাপনাও করেন। তাজিন আহমেদ ‘পিপলস রেডিও’তে ‘শহুরে সন্ধ্যা’ নামের একটি লাইভ অনুষ্ঠানের আরজেও ছিলেন। এছাড়া তিনি মঞ্চেও কাজ করেছেন। যুক্ত ছিলেন ‘নাট্যজন’ নাটকদলের সাথে। ২০০০ সালে ‘আরণ্যক’ নাট্যদলে যোগ দেন।
২০০৪ সালে তিনি নাটক লেখালেখি শুরু করেন। মোট ১২ টি নাটক লেখেন ও পরিচালনা করেন। তার লেখা ও পরিচালনায় তৈরি হয় ‘যাতক’ ও ‘যোগফল’ নামে দুটি নাটক।
ছোট পর্দার পরিচালক এজাজ মুন্নাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন তাজিন আহমেদ। তবে এই সংসার বেশিদিন টেকেনি। এর পরে তাজিন আহমেদ বিয়ে করেন ড্রামার রুমী রহমানকে।
তাজিন আহমেদ ববি হাজ্জাজের রাজনৈতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন’ (এনডিএম) কেন্দ্রীয় কমিটির বিভাগীয় সম্পাদক (সাংস্কৃতিক) ছিলেন। তবে কিছুদিন পর তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দেন।
(ঊষার আলো-এমএনএস)