জনউদ্যোগের পরিবেশ সমাবেশে বক্তারা
প্লাস্টিকের বেআইনি উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার রোধে দূষণ-কর আরোপ এবং প্লাস্টিক দূষণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনের স্বাধীন ও কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা কর্তৃক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে প্লাস্টিক বর্জ্য আলাদা করে সংগ্রহ, পৃথক্করণ, পরিবহণ, পরিশোধন করতে হবে এবং প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে; টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-১৪ এর অর্জন নিশ্চিতে প্লাস্টিক পণ্য হতে নদী ও সমুদ্র দূষণ রোধের পাশাপাশি সমুদ্র সম্পদের সংরক্ষণ নিশ্চিতে সমুদ্র অধিদপ্তর, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তদারকি কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে এবং সেই ঘোষণা ২০২৫ সালের আইএনসি সভা থেকে প্রদান করতে হবে। “ন্যাশনাল থ্রিআর স্ট্রাটেজি ফর ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট” কৌশলপত্রটি হালনাগাদ ও সংশোধনসহ পরিবেশ সংক্রান্ত বৈশ্বিক প্রতিশ্রæতির আলোকে একটি আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। প্লাস্টিক শিল্পের জন্য আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি ও অন্যান্য প্রণোদনা হ্রাস করে পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণকে উৎসাহিত করতে হবে। যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলা বন্ধ এবং পরিবেশ দূষণ রোধে সাধারণ জনগণের মধ্যে প্লাস্টিকের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে; এবং নদী, জলাশয় ও পরিবেশের বিভিন্ন উৎসে থাকা প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণসহ পরিবেশ সুরক্ষা কার্যক্রমে নাগরিক উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে সক্রিয় ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। জনউদ্যোগ খুলনার পরিবেশ কর্মীর সমাবেশে এসব কথা বলেন।
বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় জনউদ্যোগ খুলনার উদ্যোগে প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধ করুন, পরিবেশ সম্মত বিশ্ব গড়ুন এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২৫ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি, পরিবেশ কর্মীদের সমাবেশ, চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ^ পরিবেশ দিবস উদযাপন কমিটি, জনউদ্যোগ খুলনার আহবায়ক এ্যাড : মোমিনুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ট্রেজারার অধ্যক্ষ মাজাহারুল হান্নান, জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সচিব নুরুল হাসান রুবা,বীরমুক্তিযোদ্ধা আফম মহসিন, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম, খুলনা প্রেস ক্লাবের নির্বাহী সদস্য শেখ দিদারুল আলম, সিভিল সোসাইটির এস এম শাহনেওয়াজ, সমাজসেবক মাছুদ মাহমুদ, পরিবেশ কর্মী মফিদুল ইসলাম, নারী নেত্রী এ্যাড: শামীমা সুলতানা শীলু, এ্যাড: তসলিমা খাতুন ছন্দা, সাংবাদিক মোতাহার রহমান বাবু, ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমিন, আমরা বৃহত্তর খুলনাবাসীর সরদার আবু তাহের, তেরখাদার সাবেক চেয়ারম্যান এ্যাড: আলমগীর সর্দার, সবুরুন্নেছা মহিলা কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল দেবদাস মন্ডল, এএলটি আঞ্চলিক উপ কমিশনার(প্রশিক্ষণ) নৌ স্কাউট হাবিবুর রহমান, রেলওয়ে স্কাউটের সাধারণ সম্পাদক নেওয়াজ, খুলনা আর্ট স্কুলের পরিচালক বিধান চন্দ্র রায়, জনউদ্যোগ খুলনার আহবায়ক মানস রায়,নারীনেত্রী মমতাজ সুলতানা কবিতা, কৃষ্ণা দাশ, মোঃ তামিম হাসান, তীর্থ অধিকারী (সন্তু), মো: ওয়াসি উদ্দিন রাফি, সাগর পোদ্দার। সভা পরিচালনা করেন জনউদ্যোগ,খুলনার সদস্য সচিব সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন, জয় বৈদ্য ও সাগর মিস্ত্রী।
সভায় বক্তারা বলেন,জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ঝুঁকি বৃদ্ধি, কৃষি, অর্থনীতি, প্রাণীসম্পদ ও মৎস্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অন্যদিকে শিল্পের বর্জ্য ফেলে পানি ও মাটি দূষণ করা হচ্ছে। প্লাস্টিক মাটি ও পানি দূষণের পাশাপাশি জলাবদ্ধতা তৈরি করছে। তাই প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ, প্লাস্টিক ব্যবহার ও যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলা রোধ, বৃক্ষরোপণের কাজ নিজ বাসা ও অফিস থেকে শুরু করা এবং স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করার তাগিদ দিয়েছেন পরিবেশবিদরা।
বক্তারা বলেন, শিল্পের বর্জ্য ফেলে পানি ও মাটি দূষণ করছে। প্লাস্টিক মাটি ও পানি দূষণের ধারাবাহিকতায় জলাবদ্ধতা তৈরি করছে। দূষণের মাইক্রোপ্লাস্টিক ও অন্যান্য কেমিক্যাল মানুষ ও প্রাণির শরীরে প্রবেশ করে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল মারণব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে।
বক্তারা পরিবেশ রক্ষায়, প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ, প্লাস্টিক ব্যবহার ও যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলা রোধ, বৃক্ষরোপনের কাজ নিজ বাসা ও অফিস থেকে শুরু করা এবং স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম করা ও তাদেরকে এই কাজে সম্পৃক্ত করার তাগিদ দেন। অনুষ্ঠানে শতাধিক শিক্ষার্থী চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। র্যালিতে নৌ স্কাউটস, স্কাউটসসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। পরে শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত করা হয়।
ঊআ-বিএস
