UsharAlo logo
বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভয়াল ২৫ মে, আইলার ১৩ বছর

koushikkln
মে ২৪, ২০২২ ১১:৪০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি : দীর্ঘ ১৩ বছর পরও ভয়াল সেই ঘূর্ণিঝড় আইলার দিনগুলির কথা আজও ভূলেনি অবহেলিত কয়রার মানুষ। রয়েছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আইলার সেই স্মৃতি, যা দেখলেই মনে করিয়ে দেয় দূর্বিষহ দিনগুলির কথা। আজ ২৫ মে কয়রায় অনেক গ্রামে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পালিত হবে আইলা দিবস। নতুন প্রজন্মকে সে দিনের সেই ভয়াবহ স্মৃতি অথ্যাৎ কষ্টের দিনগুলির কথা জানাতে এমন আয়োজন করা হয় কয়রায়। অথচ এক যুগেরও বেশি সময় পার হলেও আইলার অনেক বড় বড় ক্ষত রয়ে গেছে কয়রায়। কিন্তু সে বিষয়ে সরকারি পদক্ষেপ না নেওয়ায় আরও বেশি মনে করিয়ে দেয় আইলার কষ্টের দিনগুলির কথা।

সর্বনাশা পবনার বেঁড়িবাঁধ ভাঙার কারনে দক্ষিণ মঠবাড়ী গ্রাম কে দু’ভাগ করে সৈয়দখালী নামক একটি শাখা নদী তৈরী হয়েছিল। যেখানে আজও স্কুল কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রী সহ স্থানীয় সহ¯্রাধিক মানুষ প্রতিদিন খেয়া নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে দেখা যায়। অন্য দিকে দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের জোড়সিং গ্রামের নতুন বাজার সংলগ্ন হারেজ খালিতে আজও খেয়াপারাপার অব্যহত আছে এবং প্রতিদিন ৫ শতাধিক মানুষ ঝুকির মধ্যে খেয়াপারাপার হয়ে থাকে।

আইলার ক্ষত চি‎‎হ্ন আজও দৃশ্যমান বিভিন্ন রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ একাধিক বাড়ীঘর। এছাড়া উপজেলার ৪ ও ৫ নং কয়রা এবং হরিহরপুর, পদ্মপুকুর, গাতীরঘেরি, হাজত খালী গ্রামের অনেক পরিবার আজও বেঁড়িবাঁধের উপর বসবাস।

এদিকে আইলা পরবর্তী দীর্ঘ ১৩ বছর হরিহরপুর গ্রামের কপোতাক্ষ নদীর বেঁড়িবাঁধের উপর বসবাস করছে ৭২ বছর বয়সী বৃদ্ধ আনার মোল্যা ও তার স্ত্রী ফুলি বিবি। সম্প্রতি এই বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার মুখোমুখি হলে তারা জানান, আইলায় তাদের কয়েক কাটা জমির উপর থাকা বাড়ীঘর এখন ঐ চোরামুখা গেটের খালের মধ্যে, সেকানে একন ১০/১২ হাত পানি। আমাদের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে অন্য এলাকায় বসবাস করে, আর আমরা বুড়োবুড়ি সেই থেকে বাঁধের উপর খুপড়ির মধ্যে থায়ি।

তারা জানায়, কপোতাক্ষ নদী চরে চিংড়ীপোনা ধরে কোন রকমে দু’জনার খাবার জোগাই। তয় কেউ এহনও খোঁজ নেয় না, কিন্তুক এক হান সরকারি ঘর পাইলে সেই কানে জীবনের বায়ি দিনগুলি কাটাতাম। তবে শুধু আনার মোল্লা নয় ৫ নং কয়রা বাঁধের উপর বসবাস ৭৫ বছর বয়সী অন্ধ রহিম বকসসহ করিমন বিবি, জহিরোন ও ভদিবিবিদের। অথচ এক দিন তাদেরও ঘরবাড়ী সব ছিল কিন্তু আইলায় নদী ভাঙনে সবকিছু কয়রা নদী গ্রাস করায় তাদের ঘরে ফেরার জায়গা নেই।

কয়রা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম বাহারুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে জানান, তিনি কয়েক মাস হল নির্বাচিত হয়েছেন।

তিনি বলেন, শুধু আইলা নয় ফণি, আম্পান ও সর্বশেষ ইয়াসে কয়রা ইউনিয়নের মত অন্য ইউনিয়নেও অনেক ক্ষত চি‎হ্ন রয়েছে। তিনি নির্বাচিত হয়েই ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাঘাট সংস্কার করে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গুলিতে কাজ শুরু করেছেন।

তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগে গৃহহারা ভূমিহীন ও এ ধরনের অসহায় পরিবারে তালিকা প্রস্তুত করে দ্রুত ঘর নির্মাণ সহ সকল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে সহযোগিতা করার প্রস্তুতি নিয়েছেন।