UsharAlo logo
শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কমছে না দ্রব্যমূল্যে : বিপাকে ভোক্তারা

koushikkln
জুন ৩, ২০২২ ১১:৪৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির লাগাম টানা যাচ্ছে না। চাল থেকে শুরু করে প্রতি পণ্যের মূল্য বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে চালের কেজিতে দাম বেড়েছে ৮ টাকা পর্যন্ত। অবশ্য সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে চালের দাম বেড়েছে কেজিতে সর্বোচ্চ ৬ টাকা। কিছু দিন আগেও যে চাল (চিকন) ৭০ টাকায় পাওয়া যেত, এখন সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৬ টাকায়। তবে বাজারে ৫০ টাকার নিচে মোটা চাল পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও গত সপ্তাহে এই চালের দাম ছিল ৪৫ টাকা কেজি। সরকারি বিবরণ সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী গত এক সপ্তাহে এই চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৭ শতাংশের বেশি।

চাল ব্যবসায়ীরা জানান, সব চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত। গত সপ্তাহে যে চাল ৬৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা গেছে, এই সপ্তাহের সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৭৫ টাকা। এছাড়া গরিবের মোটা চালের দাম ৪৬ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫২ টাকা।

বাজারগুলোতে দেখা যায়, শুধু চাল নয়, আটা-ময়দা, মসুর ডাল, পিঁয়াজ, রসুন, হলুদ, খাসির মাংস ও মুরগির ডিমের দাম বেড়েছে। এরমধ্যে দেশি হলুদের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে আমদানি করা শুকনো মরিচের দাম। যে শুকনো মরিচ গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকা কেজি দরে, এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৩২০ কেজি দরে। তবে ভালো শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি দরে।
গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে আটা-ময়দার দাম বেড়েই চলেছে। এই সপ্তাহে নতুন করে বেড়েছে কেজিতে তিন থেকে চার টাকা। গেল সপ্তাহে খোলা আটা ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ এই সপ্তাহের খোলা আটার দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা।

সব ধরনের মসুর ডালের কেজিতে দাম বেড়েছে ৫ টাকা। গত সপ্তাহে ছোট দানার মসুর ডাল ১৩০ টাকায় পাওয়া গেলেও আজ ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে ১৩৫ টাকা কেজি দরে। দফায় দফায় বাড়ছে রসুনের দাম। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আমদানি করা এক কেজি রসুন কিনতে এখন ক্রেতাদের দুইশ টাকা পর্যন্ত গুনতে হচ্ছে।
শুক্রবার (৩ জুন) ব্যবসায়ীরা আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি করছেন ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, যা তিন সপ্তাহ আগে ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে। আর দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা, যা তিন সপ্তাহ আগে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা।

গত সপ্তাহের তুলনায় দেশি পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। যা এক সপ্তাহে আগে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। তবে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকার মতো। গত সপ্তাহে যে পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন, এই সপ্তাহের সেই পেঁয়াজ তারা বিক্রি করছেন ৫৫ টাকা দরে। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি।

এদিকে ব্যবসায়ীরা এক কেজি গাজর বিক্রি করছেন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। গাজরের পাশাপাশি সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে পাকা টমেটোর দাম। এক কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এছাড়া গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম কমে এখন ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা। এদিকে কাঁচা পেঁপের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। পটল, ঢেঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কাঁচ কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। আর সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩১০ টাকা। বেশিরভাগ মাংসের দোকানে গরুর মাংসের কেজি ৭০০ টাকা বিক্রি করছেন।

ফার্মের মুরগির ডিমের দাম বেশ কিছু দিন ধরেই বাড়ছে। বাড়তে বাড়তে প্রতি হালির দাম ৪২ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। নতুন করে ডিমের হালিতে দুই টাকা করে বেড়েছে। অর্থাৎ গত সপ্তাহে যে ডিমের দাম ছিল ৩৮ টাকা হালি, এখন সেই ডিমের দাম ৪০ থেকে ৪২ টাকা।

বাজারে রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৬০ টাকা। তবে ইলিশ মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৭০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০০ থেকে ১৬০০ টাকা। ৬০০-৭০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা।