UsharAlo logo
রবিবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালিশপুর জুয়ার আস্তানায় পুলিশ, গ্রেফতার ১৫

koushikkln
সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২ ১১:১৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : নগরীর খালিশপুরে একটি জুয়ার আস্তানায় অভিযান চালিয়ে ১৫ জুয়াড়িকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় জুয়া খেলার সরঞ্জামসহ নগদ ৪০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। শুক্রবার রাত ৮টার দিকে খুলনা নগরীর খালিশপুরের পিপলস ৫মতলা কলোনীর শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদ নামের একটি ক্লাব থেকে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন- আনোয়ার শেখ (৫২), আলমগীর হোসেন (৫২), মিরাজুল সরদার (৩৮), বাদশা মন্ডল (৬৫), মাহাবুব শেখ (৩৮), উজ্জল (৩৫), সোহাগ আলী (৩৪), কালু মিয়া (৩৭), ঝন্টু মিয়া (৩২), শেখ শামীম হাসান (৩৭), ফরিদ আহম্মেদ (৫২), তুষার শেখ (৩৫), কাইয়ুম খান (৫৪), কুদ্দুস খান (৪৮) ও মোসলেম বেপারী (৩৮)।

খালিশপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ মোঃ জাহাঙ্গীর জানান, পিপলস পাঁচতলার শহীদ শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদে মাদক সেবন ও জুয়ার বসেছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্লাবটিতে অভিযান চালানো হয়। সে সময় জুয়াড়ীরা দৌঁড়ে পালানোর সময় নগদ ৪০ হাজার দুইশত টাকা ও ৭ সেট তাসসহ মোঃ কাইউম, মোঃ সোহাগ, শাহ আলম, মোঃ টিুট, বাদশা মন্ডলসহ ১৫ জুয়াড়ীকে হাতেনাতে আটক করা হয়। এ সময় সংসদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলম খান ও সহ-সভাপতি মোঃ হাবিব পালিয়ে যান বলেও ওসি জানান। আটককৃতরা সবাই স্থানীয় বাসিন্দা।

ওসি আরো জানান, শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদে জুয়া খেলার বিষয়টি জানার পর ক্লাবের সভাপতি শেখ মোঃ ইব্রাহিম ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলম খানকে জুয়ার বোর্ড বসাতে নিষেধ করা হয়। কয়েকবার তাদেরকে সতর্ক করার পরেও তারা সেখানে জুয়ার বোর্ড বসাতেন। অবশেষে অভিযান চালিয়ে জুয়ার বোর্ড ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে খালিশপুর থানার এসআই জাফিরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামী করে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে । শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে তাদের কোর্টে চালান দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

এই ক্লাবের সভাপতি ইব্রাহীম শেখ ও সাঃ সম্পাদক আলম খান। তাদের সহযোগিতায় সোহাগ নামের এক ব্যক্তি এই জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করেন। মাসে মোটা অংকের টাকা দিয়ে তারা এ ক্লাবে নিরাপদে জুয়া পরিচালনা করেন।

ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জুয়ার আসর পরিচালনায় উল্লেখিত ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা পেয়েছি। এই আলম খান ১১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী। বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহবায়ক। হাবিব, ১১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক ২নং যুগ্ন সম্পাদক বর্তমান প্রস্তাবিত কমিটির ১নং যুগ্ম সম্পাদক। মোঃ ইব্রাহিম শেখ, ১১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক ১নং সহ-সভাপতি এবং বর্তমান প্রস্তাবিত কমিটির ২ নং সহ-সভাপতি হিসেবে আছেন। গ্রেফতারকৃত বাদশা মন্ডল ১১নং ওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক মোঃ কামাল হোসেন মন্ডলের চাচা। কামাল মন্ডল ১১নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী। এসব লোকের দলের নাম ভাঙ্গিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে এ ক্লাবে জুয়ার আসর পরিচালনা করে আসছে। তবে ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আলম খান বলেন, কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। তাদের কোন কার্যক্রম নেই। এছাড়া তিনি এ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাঃ সম্পাদক। তার নির্দেশনা কেউই শোনে না। তিনি এর সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করেন।

১১নং ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, কেউ যদি অপরাধ করে তাকে তার শাস্তিভোগ করতে হবে। ক্লাবে জুয়া চলেছে তাই পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। সাঃ সম্পাদক সরদার আলী আহমেদ জুয়ার বিপক্ষে দাবি করে বলেন, ক্লাবে অনেক দিন ধরে জুয়া চলে না। তবে চক্রটি প্রতি শুক্রবারে জুয়া চালাতো বলে এখন জানতে পেরেছি। দলীয় নাম ব্যবহার করে এ জুয়া খেলা কেউ পৃষ্ঠপোষকতা করতো এটা তার জানা নেই বলে জানান।

অভিযানের পর ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দৌঁড়ঝাপ করতে দেখা যায়। এক শ্রমিকলীগ নেতাকে সভাপতির মটর সাইকেলের পিছনে বসিয়ে স্থানীয় এক বড় নেতার সাথে দেখা করতে যান। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। কলোনীর সাধারণ মানুষ খুব খুশি হয়েছেন এবং অভিযানের জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।