ঊষার আলো প্রতিবেদক : বৈশ্বিক মহামারি করোনা অর্থনৈতিক চাকার যে অবরুদ্ধতা ঘটিয়েছে তার যাতাকলের পিষ্টে আজ অবদি সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি মহানগরীর পোশাক, শপিংমল, দোকানসহ গামের্ন্টস্ প্রতিষ্ঠানের মালিকগণ। করোনা সংক্রমনের কারণে বিগত কয়েকটি ঈদের কেনাকাটার কোন সাড়া মেলাতে পারেনি এ সকল ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের এ সময় কেটেছে লকডাউনের মধ্যে দিয়েই। আবার নতুন করে করোনা সংক্রমন ব্যাপক আকারে বৃদ্ধির দরুন গত ১৪ এপ্রিল হতে শুরু করে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত দুই দফায় লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। এই লকাউনের কারণে দোকান-শপিংমল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ঈদ মুখে পোশাক বিক্রি নিয়ে চরম হতাশায় পড়েছে ব্যবসায়ীরা।
দোকানপাট, শপিংমল লকাডাউন থাকার দরুন ঘর থেকে কেউ বের হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেনি। অথচ, ঈদে বাড়তি কেনাবেচার জন্য পোশাক ব্যবসায়ী নতুন করে মুনাফা খাটিয়েছে বাড়তি মুনাফা লাভের আশায়। রোববার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১০ টা হতে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত যথাযথ সরকারী স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান-শপিংমল খোলার অনুমতি দেয়ায় মহানগরীর ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে আর আতঙ্ক কেটেছে চোর-পুলিশ খেলার। দীর্ঘ ১২ দিন পর দোকানপাট খুলতে পেরে প্রতিষ্ঠান মালিকেরা অত্যন্ত খুশি। তবে তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক, সামাজিক দূরত্ব মেনে ঈদ মুখে ব্যবসা করবে।
সরেজমিনে, খুলনা রেলওয়ে মার্কেট, বড় বাজার, রব সুপার মার্কেট, খুলনা শপিং কমপ্লেক্স, জলিল টাওয়ারসহ নগরীর আধুনিক বিপণীসহ খালিশপুর সুপার মার্কেট, ফুলবাড়ীগেট বাজার মার্কেট, শিরোমনি বৈশাখি সুপার মার্কেট, ফুলতলা সুপার মার্কেটসহ দৌলতপুর মোর্ত্তজা ম্যানশন, আশা বস্ত্রালয়, প্রবীর ক্লথ স্টোর, শিহাব ফ্যাশন, আফসানা ম্যানশন, শীতল ফ্যাশন, আচল ফ্যাশন, অমি শপিংমল, মিশন এন্ড লিখন গার্মেন্টস্, সেইফ এন্ড সেইভ, জে.কে শপিং কর্ণার, নিউ কালেকশন, ফাস্ট চয়েজ, ফারিহা ফ্যাশন, রিয়াজ সু, সালমান সু, সম্রাট সু, ওয়েলকাম সু, মের্সাস সংসার, সংসার সু, বাটা সুসহ সকল আধুনিক বিপণন কেন্দ্রগুলো খোলার প্রথম দিনে চোখে পড়ার মতোই ভীড় দেখা যায়। মালিকেরা বলছে, লাভের হিসাব পড়ে, আগের দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতনসহ আটকে পড়া ঈদের কেনাবেচার জন্য নতুন করে বিনিয়োগ করা পোশাকের টাকা উঠানোই মূল টার্গেট। দোকান খোলাতে বাজারে ক্রেতা সমাগম পরিলক্ষিত হয়েছে। তরুন-তরুনী, মহিলা, শিশু সহ প্রায় সকল বয়সের মানুষই বাজারে এসেছে।
খুলনা বড় বাজারে আসা ক্রেতা সোনিয়া বলেন, আর কয়েকদিন পরই ঈদ। লকাডাউনের জন্য বাড়ির বাইরে আসতে ভয় পেয়েছি। যেহেতু বাজার খোলা হয়েছে তাই পরিবারে সকলের জন্য কেনাকাটার জন্য আসলাম। না জানি আবার কবে দোকান বন্ধ করে দেবে। তাই আগেই আগেই এলাম।
নদীর ওপার দিঘলিয়া হতে খালিশপুর সুপার মার্কেটে আসা ক্রেতা রফিকুল এসেছে চার পরিবারের সদস্য নিয়ে। তিনি বলেন, করোনার ভয়ে বাসা থেকে কেনাকাটার জন্য আসতে চাইনি। তবে বাচ্চাদের তো আর মন মানে না। তাই আগে ভাগেই এলাম ঈদের কেনাকাটার জন্য। ঈদমুখে আর বাজারে আসবো না। কারণ ঈদের আগে প্রচুর ভীড় বাড়বে।
আশা বস্ত্রালয়ের মালিক নির্মল সাহা বলেন, লকডাউনের আগেই ঈদের জন্য আমার প্রতিষ্ঠানে নতুন নতুন শাড়ি, থ্রি-পিচ উঠানো হয়েছে। তবে লকডাউনের কারণে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছি। তবে নতুন করে দোকান খোলায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেয়েছি। অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনাবেচা করবো। তবে জানিনা পরিস্থিতি কেমন যাবে বা কেমন কেনাবেচা হবে। তবে দোকান খোলার প্রথম দিনে কেনাবেচা সাড়া সন্তোষজনক।
আইন-শৃঙখলার বিষয়ে দৌলতপুর ওসি (তদন্ত) মোঃ আমিনুল ইসলাম মিন্টু বলেন, যেহেতু ঈদের সময়ে বাজারে কেনাকাটার চাপ থাকে। তাই যেন দৌলতপুর থানাধীন এলাকায় যেন আইন-শৃঙখলার কোন অবনতি না ঘটে তার জন্য বাড়তি পুলিশ মোতায়ান করা হবে।
(ঊষার আলো-এমএনএস)