UsharAlo logo
শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জলবায়ূ ক্ষতি : বিশ্বনেতাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে চাপ প্রয়োগের আহ্বান

koushikkln
সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২ ৫:১৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : বিগত প্যারিস বিশ্ব জলবায়ূ সম্মেলনে দেওয়া প্রতিশ্রæতি বিশ্বনেতারা রাখেননি। ওই সম্মেলনে বৈশ্বিক কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের মাত্রা এক দশমিক ৫ শতাংশ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়। না হলে উপকূল অঞ্চলগুলো পানির তলদেশে চলে যাবে। অথচ এ প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়ন হয়নি। বৈশ্বিক উষ্ণতা এক দশমিক ৫ শতাংশের উপরে গেলে চর ও উপকূল অঞ্চলগুলো ডুবে যাবে। পৃথিবীতে গ্রীণ হাউজ তৈরি করতে না পারলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে। এজন্য উন্নত দেশগুলোর উপর চাপ বাড়াতে হবে। জলবায়ু মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ফান্ড সংগ্রহ করতে হবে। উন্নত দেশের কারণে বাংলাদেশের পরিবেশের উপর যে প্রভাব পড়েছে তার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বিশ্ব নেতাদের প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নে কপ-২৭ সম্মেলনে চাপ তৈরি করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) কপ-২৭ বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান ও নাগরিক সমাজের অভিমত বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর সিরডাপ সম্মেলন কেন্দ্রে অ্যাওসেড, সিডিপি, সিপিআরডি, সিএসআরএল, ইউকিউয়িটি বিডি যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা করে। আগামী নভেম্বরে আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলনের (কপ-২৭) আয়োজন হতে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুর নাহার এমপি।

উপমন্ত্রী বলেন, গত কপ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতাদের শিল্প উন্নয়নের জন্য উন্নত দেশ জলবায়ূর ক্ষতি করছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি এ সমস্যা সমাধানে তাদের দায়িত্ব নেওয়ার আহŸান জানান। কিন্তু বিদেশ থেকে এ সংক্রান্ত পর্যাপ্ত ফান্ড আসে না। প্রকল্পভিত্তিক অর্থ আসলেও সেখান থেকে কেউ চাইলে দেওয়া সম্ভব হয় না।

উপমন্ত্রী আরো বলেন, রামপাল এলাকার তিনটি গ্রামে খাবার পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। সেখানে গভীর নলকূপ খনন করলেও খাবার পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ধীরে ধীরে অনেক অঞ্চলের এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। নিরাপদ পানি নিশ্চিত করতে সরকার থেকে ৯৬১ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে। একই সঙ্গে দেশে দক্ষ জনবল তৈরি করতে কারিগরি শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

অনুষ্ঠানে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র আলী আকবর টিপু বলেন, খুলনা পৃথিবীর অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ একটি শহর। জলবায়ূ পরিবর্তনজনিত কারণে খুলনা নগর, আশপাশের জেলা ও উপজেলায় দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। জলবায়ূ ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষ ঝুকিপূর্ণ রয়েছে। এই বৃহৎ দরিদ্র মানুষের স্বাভাবিক চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা খুলনা সিটি করপোরেশনের নেই। সে কারণেই জলবায়ু ঝুকিপূর্ণমানুষ গুলো যাতে বাস্তুচ্যুত না হয় কর্মচ্যুত না হয় তাই তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি, বেসরকারি, বিদেশি উন্নয়ন সংস্থার সবাইকে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে পরিবেশবাদীরা বলেন, পৃথিবীর উষ্ণতা বেড়ে চলছে। প্যারিস সম্মেলনে উষ্ণতা কমানো ও এ সংক্রান্ত ফান্ড তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। বিদেশ থেকে সরকারের কাছে যে পরিমাণে অর্থ আসছে তাও সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে না।

বক্তারা আরো বলেন, ‘বর্তমানে পৃথিবীর বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ার কারণে জলবায়ুর বড় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। উন্নত দেশগুলো অর্থনৈতিক লাভের জন্য উষ্ণতা বাড়াচ্ছে। এতে করে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বসবাস করা মানুষ। আমাদের দেশে নদী ভাঙ্গনের মাত্রা বেড়ে গেছে। চরঅঞ্চলের মানুষ ঢাকায় চলে আসছেন। এসব বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি কোনো পরিসংখ্যান নেই। সরকারের মধ্যে নিজের সমন্বয়হীনতার কারণে বিদেশ থেকে ফান্ড আসলেও তা সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে না।’
কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা- ২ আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। উপস্থিত ছিলেন অ্যাওসেডের নির্বাহী পরিচালক শামিম আরেফিন প্রমুখ।