UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সড়কে বিপদ ‘মোবাইল’

koushikkln
সেপ্টেম্বর ১০, ২০২২ ১০:৫৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মোঃ আশিকুর রহমান : আধুনিক যুগের আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে সর্বক্ষেত্রে। তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে করেছে অতি সহজলভ্য ও আরামদায়ক। জীবনে এনেছে আমুল পরিবর্তন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অন্যতম উপহার হলো স্মার্ট মোবাইল ফোন। ক্ষুদ্র এই আধুনিক যন্ত্রটি বিশ্বের একপ্রান্ত হতে অপর প্রান্তে যোগাযোগ ব্যবস্থায় এনে দিয়েছে আমুল পরিবর্তন, দুনিয়া যেন হাতের মুঠোই। তবে একদিকে মোবাইল আমাদের নিত্য নৈমিত্তিক জীবনকে আরাম দায়ক করে তুললেও, অতি আসক্তির কারণে জীবনকে ফেলছে ঝুঁকি মধ্যেও!
আমাদের অসচেনতা আর খাম-খেয়ালীপনার কারনে মোবাইল ফোন যেন জীবনের জন্য ঝুঁকির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে এমন দৃশ্য দেখা গেছে নগরীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে। রাস্তায় বের হলেই হরহামেশা দেখা মেলে শহরের গুরুত্বপূর্ন সড়ক ও মোড়ে, চলন্তপথে কানে লাগানো বøু-টুথ বা হেড ফোন, চলছে ফোনে কথা বলা, ফেসবুকিং বা মেসেজ আদান-প্রদান, হেডফোন কানে নিয়ে গান শুনতে শুনতে রাস্তা পার হচ্ছেন অসংখ্যক পথচারী। এসব পথচারী একবারও ভাবছে না তার এই অসর্তকতা ‘কেড়ে নিতে পারে তার মূল্যবান একটি জীবন’।

ব্যস্ততম নগরী খুলনায় ট্রাফিক আইননের বর্হিভূত কার্যকলাপে নিত্যনৈমিত্তিক লিপ্ত হচ্ছেন একশ্রেণির অসচেতন মানুষেরা। যারা পোশাকে সুশীল সমাজের মানুষ মনে হলেও কার্যকলাপ তার সম্পূর্ণ বিপরীত। তাদের ইচ্ছা-স্বাধীন ও উদাসীন চলাচলের ফলে সড়কে তরতাজা প্রাণ ঝড়ে পড়াসহ ঘটে চলেছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। যার অন্যতম একটি কারণ হলো রাস্তা পারাপার ও গাড়ি চালনার সময় মোবাইল ফোনের ব্যবহার বা কথা বলা। এমন দৃশ্য প্রতিদিনই শহরে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে দেখা যাচ্ছে। তবে প্রতিকার মিলছেনা। মাথায় নেই হেলমেট, কখনো থাকলেও তার মধ্য হতে মোবাইল ফোন কানে তুলে অমনোযোগী হয়ে যানবাহন চালাচ্ছেন চালকেরা।

নগরীর ব্যস্ততম সড়ক ডাকবাংলা, শিববাড়ী, ফেরীঘাট, নিউমার্কেট, সাউথ সেন্ট্রাল রোড, হেলাতলা (ক্লে রোড), আহসান আহমেদ রোড, হাজী মুহসীন রোড, ফারাজীপাড়া, সেন্ট্রাল রোড, শামসুদ্দিন আহম্মেদ রোড, রয়েল মোড়, ডালমি, ময়লাপোতা, সাতরাস্তার মোড়, গল্লামারী, নিরালা, জিরোপয়েন্ট, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর, দৌলতপুর, রেলিগেট, মানিকতলা, ফুলবাড়ীগেট, শিরোমনি, ফুলতলা, রুপসা, খুলনা-যশোর মহাসড়কে পারাপারসহ স্থানীয় অঞ্চলের সড়কেরগুলোতে অধিকাংশই সময় স্বাভাবিক ভাবেই মোবাইল ফোনে কথোপোকথন চালিয়ে যাচ্ছে আর হঠাৎ অমনোযোগী হওয়ার দরুন নিমেষেই কবলে পড়ছে দুর্ঘটনায়।

পথচারী কামরুজ্জামান জানান, সড়ক দুর্ঘটনার অন্যান্য কারণগুলোর সঙ্গে যোগ হয়েছে চালকদের মোবাইল ফোনে কথা বলার প্রবণতা। ফোনে কথা বলতে বলতে যানবাহন চালানোর সময় তারা অন্যমনস্ক হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে। এধরনের দুর্ঘটনা ইদানিং অনেক বেড়েছে। অনেক চালক ফোনে কথা বলতে গিয়ে রাস্তায় মধ্যে গাড়ির গতি কমিয়ে দিয়ে যানজটও তৈরি করেন। এরজন্য প্রয়োজন নিজের সচেতনতা।

সাবেক কাউন্সিলর এস.এম হুমায়ুন করিব জানান, রাস্তায় বের হলেই প্রতিনিয়ত চোখে পড়ছে অপ্রাপ্ত বয়সী যুবকেরা মোটরসাইকেল চালানোর সময়, সিএনজি, মাহেন্দ্র, ইজিবাইকে বসে মোবাইলে কথা বলে থাকে। অপ্রাপ্ত ছেলেদের হাতে মোটর সাইকেল তুলে দেয়া ঠিক না। মোটরসাইকেল কিনে দেয়ার আগে বাবা-মায়ের উচিৎ তাদের সন্তানদের ভারসাম্যে বজায় ও ট্রাফিক নিয়ম মেনে গাড়ি চালনা করার ব্যাপারে দিক নির্দেশনা প্রদান করা উচিত বলে জানান।

কেএমপি’র ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মনিরা সুলতানা জানান, যানবাহন চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। এ সংক্রান্ত অপরাধে ট্রাফিক আইনের ১৪০ এবং ১৪৯ ধারায় মামলা হয়ে থাকে। কেবলমাত্র জরিমানা করে এটি বন্ধ করা প্রয়োজন গণসচেতনতাও।
উল্লেখ্য, গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা না বলার ব্যাপারে মোটরযান আইনের সংশোধন করা হয়েছে যেখানে যানবাহন চালানোর সময় মুঠোফোনে কথা বলা নিষিদ্ধও করা হয়েছে।