UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানির জন্য শহরজুড়ে হাহাকার

koushikkln
মে ৩, ২০২১ ১২:০২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ওয়াসার লাইনে পর্যাপ্ত
পানি পাওয়া যাচ্ছে না

বিশেষ প্রতিনিধি : শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকে খুলনা মহানগরীতে খাবার পানির তীব্র সংকট চলছে। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে হস্তচালিত নলকূপ থেকে পানি উঠছে না। নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় খাবার পানির জন্য মানুষ ধর্না দিচ্ছে উচ্চবিত্তদের বাড়িতে। এমন সংকটের মধ্যেও গত দুই সপ্তাহ ধরে নগরীর বেশিরভাগ এলাকার মানুষ পর্যাপ্ত পানি পাচ্ছেন না। পানির জন্য কষ্ট এখন খুলনা নগরীর ঘরে ঘরে।
অবশ্য ওয়াসার কর্মকর্তারা বলছেন, পানির সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। কি কারণে মানুষ পানি পাচ্ছে না খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
নগরীর টুটপাড়া, শিপইয়ার্ড, দারোগাপাড়া, সরকারপাড়া, শেখপাড়া, বাইতিপাড়া, জোড়াকল বাজার, বসুপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এপ্রিল মাসের শুরু থেকে ওয়াসার পানি সরবরাহ কিছুটা কমে যায়। গত ৮/১০ দিন ধরে পানি সরবরাহ একেবারেই কমে গেছে। অনেক এলাকায় সারাদিনে একবারও পানি যাচ্ছে না।
নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের শিপইয়ার্ড মোল্লাপাড়া ১২ নম্বর গলিতে প্রায় ৩০টি বাড়ির মানুষ ওয়াসার পানির ওপর নির্ভরশীল। গত দেড় মাস ধরে তারা পানির কষ্টে ভুগছেন।
ওই গলির বাসিন্দা মুর্শিদা মিনা বলেন, কখন পানি আসবে সেই অপেক্ষা বসে থাকতো হয়। আগে ১৫ মিনিটে পানির রিজার্ভ ট্যাংক ভরে যেতো। সারাদিন সেই পানি ব্যবহার করতাম। এখন দেড় থেকে দুই ঘণ্টায়ও পানির ট্যাংক ভরে না। পানিতে হালকা লবণও পাওয়া যাচ্ছে।
২৮নং ওয়ার্ডের টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের গাছতলা মন্দিরের আশপাশে প্রায় শতাধিক পরিবার ওয়াসার পানির ওপর নির্ভরশীল। পানি নিয়ে তাদের অভিযোগের শেষ নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, গত ২৮ এপ্রিল সারাদিন পানি ছিলো না, ২৯ এপ্রিল সকাল থেকে পানি নেই। চিন চিনে গতিতে পানি আসে। এতে রিজার্ভ ট্যাংক ভরে না। ওয়াসায় ফোন দিলেও কেউ সাড়া দেয় না।
৩০নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ টুটপাড়া জাকারিয়া রোডের ৫৫ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা হুমায়ুর কবির বলেন, এপ্রিল মাস ধরে পানির কষ্ট। বাধ্য হয়ে পাশের বাড়ি থেকে পানি এনে ব্যবহার করছি। ওয়াসার পানি পাচ্ছি না অথচ বিল দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, পানির কষ্টের কথা ওয়াসার কর্মকর্তাদের ২/৩ বার বলেছি কিন্তু কেউ আসে না। গত রোববারও অভিযোগ করেছি, তারা বলে মধুমতি নদীর পানিতে লবণ, তাই পানি নেই।
একই ওয়ার্ডের সরকার পাড়া প্রথম লেনের ১৫/২ নং বাড়ির বাসিন্দা সুমন সাহা বলেন, ২০ লিটারের বালতি ভরতে আধা ঘণ্টা সময় লাগে। পানির এমন কষ্ট আগে কেউ কখনো দেখা যায়নি। তিন ধরে ফোন দেওয়ার পর গতকাল ওয়াসার লোক এসেছিলো। তারা চেক করে কোনো সমস্যা পায় নি। তারপরও দুই ধরে কোনো পাচ্ছি না।
এ ব্যাপারে খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ৭ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হয়। এখনও তাই হচ্ছে। তারপরও কেন মানুষ পানি পাচ্ছে না, খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকারপাড়া এলাকার পানির লাইনে আছে কিন্তু বাড়ি বাড়ি পৌঁছাচ্ছে না। কোথাও বাল্ব বন্ধ কি-না খোঁজ নিচ্ছি। পাইপলাইন সংস্কারের কারণে মাঝে মাঝে কিছু এলাকায় লাইন বন্ধ থাকছে, তখন বিভিন্ন এলাকায় পানি বন্ধ থাকছে।