UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদেশের বাজার হারিয়েছে খুলনার বেসরকারি পাটকলগুলো

usharalodesk
মে ৮, ২০২১ ৫:১৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

এম এন আলী শিপলু : সরকারি পাটকল বন্ধ হওয়ার পর এবার বেসরকারি পাটকলগুলো বন্ধ হওয়ার পথে। বেসরকারি পাটকলগুলোতে কাঁচাপাটের সরবরাহ নেই বললেই চলে। খুলনা-বাগেরহাটে এমন পাটকলের সংখ্যা ১৭টি। উৎপাদন না থাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য ও ভারতে চট ও সুতার বাজার হারিয়েছে। কাঁচামাল না থাকায় বেসরকারি পাটকলগুলোতে আগে-ভাগে ঈদের ছুটি দিয়ে দিয়েছে।
২০১৮ ও ২০১৯ সালে নওয়াপাড়া ও খুলনার দৌলতপুরে প্রতি মন কাঁচাপটের মূল্য ছিল প্রকার ভেদে দু’হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা। যা ২০২০ সালের জুলাই থেকে প্রতি মনের দাম দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার জন্য মজুদ করেছে। সরকার এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। গত জুলাই থেকে বাগেরহাট ও খুলনায় এ পর্যন্ত ৮৭টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালিত হয়েছে। এ আদালতে ৮৭জনের দণ্ড হয়।
যশোর-খুলনার নয়টি সরকারি পাটকলের উৎপাদন বন্ধ থাকায় কাঁচামালের সরবরাহ বাড়ার কথা থাকলেও ফল হয়েছে উল্টো। কাঁচাপাট সংকটের কারণে খুলনার বেসরকারি ১৭ পাটকলের উৎপাদনের চাকা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কাঙ্খিত উৎপাদন না হওয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য, চীন ও ভারতের বাজার হারাতে বসেছে দেশ।
পরপর তিন বছর কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় ফরিদপুর, শরীয়তপুর, যশোর ও সাতক্ষীরার চাষিরা পাট উৎপাদন কমিয়ে দেয়। গেল মৌসুমে বন্যা ও আম্ফানের কারণে পাট উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে বাজারে কাঁচাপাটের সংকট দেখা দেয়। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোকাম দৌলতপুরে প্রতি মন পাট দুই হাজার চারশ’ টাকার পরিবর্তে পাঁচ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচাপাটের মূল্য বেশি থাকায় উৎপাদন সংকটে পড়েছে ফকিরহাটের জয় জুট, মুনস্টার, এএমএম জুট, রূপসার গ্লোরী, সালাম, ওহাব, ডুমুরিয়ার শাহ চন্দ্রপুরী, বটিয়াঘাটার হাবিব জুট, দিঘলিয়ার সাগর জুট, জুট টেক্সটাইল, ফুলতলার আইয়ান জুট, সুপার জুট, মিশু জুট, এফআর জুট ও যশোর জুট প্রডাক্টস। ফকিরহাটের এএমএস জুট ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়েছে।
পাট অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, সুপার জুট মিল পাট কিনতে পারছে না। উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে। তাদের উৎপাদন খরচ হচ্ছে না। বেসরকারি পাটকলগুলোর টিকে থাকা কষ্টসাধ্য হচ্ছে।
পাট অধিদপ্তর খুলনার মুখ্য পরিদর্শক সরজিৎ সরকারের কাছে জানতে চাইলে বলেন, বেসরকারি পাটকলগুলো পাট কিনছে কম। এমনিতেই তাদের হাতে পুঁজির সংকট। কাঁচাপাটের দাম বেড়ে যাওয়ায় পাটকলে পাটের সংকট দেখা দিয়েছে। ৩৬ বছরে এমন সংকট কখনো হয়নি। ২০১৯ সালে কাঁচাপাটের মূল্য ছিল মন প্রতি দুই হাজার চারশ’ টাকা। এ মৌসুমের মূল্য মন প্রতি পাঁচ হাজার টাকা।
রূপসাস্থ সালাম জুট মিলের ম্যানেজার বশির আহমেদ জানান, প্রতি দিন এ প্রতিষ্ঠানে ১৬ মেট্টিক টন কাঁচাপাটের প্রয়োজন ছিল। আজ ও কাল কোনও সরবরাহ নেই। উৎপাদন কমে গেছে। এক সপ্তাহ আগেই শ্রমিকদের ঈদের ছুটি দেয়া হয়েছে। তার দেয়া তথ্য মতে, মধ্যপ্রাচ্য, টারকী ও ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে চট ও সুতার বাজার সংকুচিত হয়েছে। মিশর ও চীনে অল্প-স্বল্প রপ্তানি হচ্ছে।

(ঊষার আলো-এমএনএস)