UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মহিয়সী নারী নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী নির্মিত ১০ গম্বুজ মসজিদ

usharalodesk
মে ৫, ২০২১ ৫:২০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : অবদান ও অর্জনে মহিয়সী নারী নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী ইতিহাসের পাতায় চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণের পাশাপাশি নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অনবদ্য অবদান রেখে গিয়েছেন তিনি। তার নির্মিত স্থাপনাসমূহের মধ্যে একটি হল ১০ গম্বুজ যা বিশিষ্ট অনিন্দ্য স্থাপত্যশৈলীর মধ্যে মসজিদটি অন্যতম, যা ‘নওয়াব বাড়ি মসজিদ’ হিসেবেও পরিচিত।

মসজিদটি কুমিল্লার লাকসামে জমিদার বাড়ির পাশে নির্মাণ করা হয়। মসজিদটি দেখতে খুবই নান্দনিক ও দৃষ্টিনন্দন। তৎকালীন ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী এ মসজিদটিতে পুরুষদের পাশাপাশি নারীদেরও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রাখেন।

মসজিদের ভেতরের দেয়াল, মিম্বর ও মুয়াজ্জিনের আজান দেওয়ার জায়গায় রয়েছে দু’ধরনের টাইলসের কারুকাজ। তৎকালীন সেই টাইলসগুলো ছিল খুবই দৃষ্টিনন্দন। দেয়ালের উপরের অংশের টাইলসগুলোতে আছে গোলাপি, সাদা এবং নীল রঙের কারুকাজ। নিচের দিকের টাইলসগুলোতে রয়েছে হালকা শ্যাওলা সবুজ রঙের ডিজাইন।

মসজিদটির ছাদে রয়েছে মোট ১০টি গম্বুজ। মাঝ বরাবর রয়েছে একটি বড় গম্বুজ। বড় গম্বুজের চারপাশেই রয়েছে বাকি ৯টি গম্বুজ। ফয়জুন্নেছা মুসল্লিদের সুবিধার্থে সেখানে একটি পুকুর খনন করেছিলেন। তার পাশেই আছে অজু করার জন্য খননকৃত পুকুরটি। মসজিদটির সামনেই শায়িত রয়েছেন নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী ও তার পরিবারের উত্তরসূরিরা। মসজিদের দক্ষিণে পারিবারিক কবরস্থান তারই পরিবারের। নওয়াব ফয়জুন্নেছার ছোট কন্যা বদরুন্নেছা চৌধুরাণীকে নিজ গ্রাম পশ্চিমগাঁওয়ে বিয়ে দেওয়ায় তার কবরটি তার মায়ের পাশেই হয়েছে।

তার অপর মেয়ে সৈয়দা আসাদুন্নেসা চৌধুরাণীকে বৃহত্তর সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার জমিদার বাড়িতে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে এখানে তার কবর নেই। আলহাজ খান বাহাদুর সৈয়দ মুহাম্মদ গাজিউল হক, সৈয়দ শাহ আজহারুল হক, সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল হক, মোতওয়াল্লী মৌলভী সৈয়দ সিরাজুল হক ও সৈয়দা খাইরুন্নেসা বেগমসহ আরো কয়েকজনের কবর আছে ওখানে। প্রত্যেক ফলকেই নাম আর জন্ম-মৃত্যু সাল লেখা রয়েছে।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো. আতাউর রহমান জনান, মহিয়সী নারী নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী কর্তৃক নির্মিত ১০ গম্বুজ মসজিদটি খুবই সুন্দর ও নান্দনিক। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর তার বাড়িটিকে আকর্ষণীয় এক প্রত্নপর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তার জন্য ৩০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করা হলে বাড়িটির পাশাপাশি মসজিদটিকেও আরো দৃষ্টিনন্দিত করে তুলা হবে।

(ঊষার আলো-এফএসপি)