UsharAlo logo
শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রড-সিমেন্টের পর এবার বাড়লো পাথরের দাম

usharalodesk
মে ৪, ২০২১ ১১:২৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

থমকে যাচ্ছে খুলনার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ

বিশেষ প্রতিনিধি : এবার রড-সিমেন্টের পর বাড়লো পাথরের দাম। যার ফলে হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ থমকে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত দুই মাস ধরে প্রতি টন রডের দাম বেড়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে। নির্মাণের অন্যতম উপকরণ সিমেন্টের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি ব্যাগে ৭০ থেকে ৯০ টাকা। এরপরও উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রেখেছিলেন ঠিকাদাররা। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ ধরে নির্মাণের গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ পাথরের দাম বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। ১২০ টাকার পাথর মঙ্গলবার (৪ মে) বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকায়। একের পর এক নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় থমকে গেছে বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন কাজ। লোকসান এড়াতে ঠিকাদাররা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিচ্ছেন। ব্যক্তিগতভাবেও ক্ষতির শিকার হচ্ছেন ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবন নির্মাণে নিয়োজিতরা।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দাম বৃদ্ধির প্রবণতা শুরু হয়। প্রথম দফায় সব কোম্পানির সিমেন্টের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়। গত দুই মাসে প্রতি ব্যাগ সিমেন্টের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ। দেখা গেছে, কোম্পানি ভেদে ৪০০-৪২০ টাকার টাকা টাকার সিমেন্টের বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে প্রতি ব্যাগ ৫০০-৫২০ টাকায়। রডেও একই অবস্থা। আগে যেই রড প্রতি টন ৫০-৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমান সেই রডের দাম ৭৫-৭৮ হাজার টাকা।
রড সিমেন্টের দাম বাড়লেও কিছুটা স্থিতিশীল ছিলো পাথরের দাম। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ থেকে পাথরের দামও বাড়তে শুরু করে। ভোমরা ও বেনাপোল বন্দরে ১২৫ টাকা ফুটের পাথর মঙ্গলবার (৪ মে) বিক্রি হয়েছে ১৯৫ টাকায়। সংকট থাকায় কেউ কেউ ২০০ টাকা ফুটেও পাথর কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনায় গণপূর্ত বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর, সড়ক বিভাগ, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও সিটি করপোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার প্রায় এক হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। সড়ক বিভাগ ছাড়া অন্যান্য সংস্থার প্রতিটি কাজের অন্যতম উপকরণ রড, সিমেন্ট ও পাথর। দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক সংস্থার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন ঠিকাদাররা।
সূত্রটি জানায়, কেসিসির বিএমডিএফ প্রকল্পের আওতায় নগরীর ফুলবাড়িগেট এলাকায় সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ চলছিলো। পাথরের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং সংকটে অর্ধেক অবস্থায় পড়ে রয়েছে কাজ। নগরীর ট্যাংক রোড এবং হাজী মহসীন রোডে ড্রেন নির্মাণের কাজও বন্ধ ছিলো দীর্ঘ দিন। এছাড়া অন্যান্য কাজের গতিও কমে গেছে।
এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় নগরীর ভেতরে ১০টি ড্রেন পুননির্মাণ কাজ চলছে। সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এসব কাজের প্রধান উপকরণ রড, সিমেন্ট ও পাথর। দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে কাজের গতি কমে গেছে। যার দুর্ভোগ পোহাচ্ছে নগরীর সাধারণ মানুষ। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত, বিএমডিএফসহ বিভিন্ন প্রকল্পের আরও ১০০ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে প্রতিটি কাজে।
কেসিসির ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক তসলিম আহমেদ আশা বলেন, পাথরের অভাবে আমার নিজের কাজই শেষ করতে পারছি না। রাস্তার কার্পেটিং অর্ধেক অবস্থায় পড়ে আছে। দাম বৃদ্ধির কারণে অনেক ছোট ঠিকাদার পুঁজি হারিয়ে পথে বসে যাবে।
কেসিসির নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান বলেন, দাম বৃদ্ধির পর ট্যাংক রোড ও হাজী মহসিন রোডের কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন ঠিকাদাররা। বৃষ্টির আগে শেষ করতে হবে তাই আমরা জোর করে কাজ করাচ্ছি। এতে ঠিকাদারদের আর্থিক ক্ষতি হলেও আমাদের কিছু করার নেই। নির্ধারিত সময়ে কাজ করতে আমাদের ওপরও চাপ রয়েছে।

(ঊষার আলো-এমএনএস)