UsharAlo logo
শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

৫ মে ১৯৭১, বুধবার

usharalodesk
মে ৫, ২০২১ ১১:৪৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

গোপালপুর গণহত্যা

ঊষার আলো ডেস্ক : ৫ মে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা নাটোরের লালপুরে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে, মিলের জেনারেল ম্যানেজার লেফটেন্যান্ট আনোয়ারুল আজিমসহ ২০০ এর বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মিল চত্বরের পুকুর পাড়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার ও বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। সেদিন বন্দিদের মধ্যে কেবল পাঁচ জন কর্মচারী প্রাণে বাঁচেন। তারা হলেন আবদুল জলিল শিকদার, খোরশেদ আলম, আবুল হোসেন, ইমাদ উদ্দিন এবং ইঞ্জিল সর্দার।
৫ মে, পাকিস্তানি হানাদারেরা নাটোরের লালপুলের গোপালপুরে পৌঁছায়। এসময় বাঙালিদের শক্ত ঘাঁটি চিনিকল দখল করে ফেলে। প্রায় ২০০ বাঙালি জনগণ যারা মূলত চিনিকলের কর্মচারী ছিল, সবাইকে জড়ো করে প্রথমে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের নেতা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট আনোয়ারুল আজিম আত্মসমর্পণ করেন অনুরোধ করেন যেন নিরীহ লোকজনকে ছেড়ে দেয়া হয়। সেনারা লেফটেন্যান্ট আনোয়ারুল আজিম ও তার পরিবারকে গুলি করে হত্যা করে। বন্দি কর্মচারীদের চিনিকলের ভিতরে একটি পুকুরের সামনে লাইনে দাঁড় করানো হয় এবং গুলি করে মারা হয়। মৃতদেহগুলোকে পুকুরে নিক্ষেপ করা হয়।
ঢাকায় শান্তিবাহিনীর বৈঠক
৫ মে ঢাকার ধামরাই থানায় শান্তিবাহিনীর এক বৈঠকে মোজাম্মেল হককে সভাপতি এবং শমসের আলীকে সাধারণ সম্পাদক করে ধামরাইয়ে ১০৮ সদস্য বিশিষ্ট শান্তি কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি।
ঢাকার বাইরে প্রতিরোধ যুদ্ধ ও গণহত্যা
৫ মে নবম সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিল বরিশাল ফের মুক্ত করার উদ্দেশ্যে এমপিএ নূরুল ইসলাম মঞ্জুর ও লেফটেন্যান্ট নাসেরকে সঙ্গে নিয়ে দুটি লঞ্চে ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা ও প্রচুর অস্ত্রশস্ত্রসহ নিয়ে ভারতের শমসেরনগর থেকে বাংলাদেশের দিকে আসতে থাকেন। এদিন কপোতাক্ষ নদের তীরে গাবুরা চরের কাছে লঞ্চ দুটি পৌঁছালে পাকিস্তানি হানাদারেরা গানবোট দিয়ে তাদের উপর অতর্কিত আক্রমণ করে। এই সময় আকস্মিক আক্রমণে এমপিএ মহিউদ্দিন ও অ্যাডভোকেট সর্দার জালালসহ ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা পাকসেনাদের হাতে বন্দি হন এবং অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদসহ লঞ্চ দুটিও ধ্বংস করে পাকিস্তানি হানাদারেরা।
৫ মে চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ির রামগড় সীমান্তে মুক্তিবাহিনীর সাথে পাকিস্তানি হানাদারদের তীব্র সংঘর্ষ হয়।
৫ মে পিরোজপুরের এসডিও আবদুর রাজ্জাক, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান ও এসডিপিও ফয়জুর রহমান আহমেদকে পাকিস্তানী হানাদারেরা দালালদের সহযোগিতায় গ্রেফতার করে। তারা সবাই ছিলেন মুক্তিবাহিনীর সমর্থক। পুলিশ কর্মকর্তা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের বাবা।
সিলেটের নানিয়ায় ৫ মে পাকিস্তানি হানাদারেরা পৈশাচিক নির্যাতনের পর গুলি করে ব্রাশফায়ার করে ২৬ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে।
৫ মে ১নং সেক্টরের আওতায় প্রথম ২৫ সদস্য বিশিষ্ট পার্বত্য চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা দল গঠন করা হয়। এই দল গঠনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হেমদারঞ্জন ত্রিপুরা। পরবর্তীতে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ কোম্পানি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছিল। তথ্যসূত্র- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র ষষ্ঠ, অষ্টম, নবম ও ত্রয়োদশ খণ্ড।

(ঊষার আলো-এমএনএস)