UsharAlo logo
শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পেটের দায়ে উধাও মৃত্যুভয়, রাস্তায় শ্রমজীবী মানুষ

koushikkln
এপ্রিল ১৭, ২০২১ ৩:০৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

অভিজিৎ পাল : কথায় ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়। করোনা সংক্রমণের হার ও করোনায় মৃত্যুর হার কোন কিছুতেই নজর নেই নিত্য রোজগেরে অসহায় মানুষদের। পেটের দায়ে মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে তাই রাস্তায় নেমেছে। রাস্তায়ও নেই কাজ, আছে প্রশাসনের চোখ রাঙানি। দুর্যোগকালীন সময়ে এক কথায় অসহায় জীবন তাদের।
শনিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে সাতটায় খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থেকে নগরীর সাতরাস্তার মোড়ে এসেছেন শিবপদ বিশ^াস। পেশায় জুতো সেলাইপালিশ। পেটের দায়ে লক ডাউনের মধ্যে সংবাদপত্রের গাড়িতে করে খুলনায় এসেছেন। এভাবেই চলছে জীবন তাদের। কাজ না করলে বাড়ির লোকজন না খেয়ে থাকবে।
এ সময় পাশ থেকে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে নগরীর পূর্ব বানিয়াখামারের বাসিন্দা মোহাম্মদ ওহিদুল। চোখের জলে মুছতে মুছতে তিনি বলেন, কাজ কাম নাই, তারপর লকডাউন, সিমেন্ট রডের দাম বাড়তি, কেউ কাজ করাতে চায় না আমরা কি করে খামু। ছেলে মেয়ে ও বৌসহ চার জনের সংসার তার।

কষ্টের কথা বলে গিয়ে ম্রমজীবী মানুষের কান্না – উষার আলো

বাগমারা চেয়ারম্যান মোড়ের বাসিন্দা শাহিনা বলেন, স্বামী নাই। ঘরে বৃদ্ধ মা ও মেয়েসহ তিন জনের সংসার তার। গত লক ডাউনে সাহায্য সহযোগিতা পেয়েছিলেন। এই লকডাউনে তাও নাই। পেটের দায়ে ভোরে রাস্তায় এসে বসেছেন। যদি কেউ কোন কাজ দেই তাই করবেন।
নগরীর তালতলা হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা সামসুল হক বলেন, সংসারে ৫ জন লোক। একমাত্র আয় করেন তিনি। কাজ না করলে খাবে কি তারা। অনেকটা ক্ষোভের সাথেই তিনি বলেন, ‘‘এতো করোনা হলো বাংলাদেশে কেউ আমাদের একটা বিড়ি এনে দিয়ে বললো না, আপনারা খান’’।
বাগমারা এলাকার আব্দুস সবুর বলেন, আগে ৫ কেজি চাল দিলে এখন দেয় তিন কেজি। ১০ টাকায় ২৫ কেজি চাল বিক্রি করতো আগে এখন তা দেয় না। আমরা কি করে চলমু। আমাদের তো কাজ না করলে খাওন হয় না। করোনায় মরলে মরবো। কাজ না করলেতো বৌ ছুয়াল মাইয়ে নিয়ে না খাইয়ে মরবো।
নগরীর সাতরাস্তার মোড়ে দিন মজুররা বলেন, প্রতিদিন এখানে ২০০ এর অধিক মানুষ জড়ো হয়। এখন লক ডাউনে কাজকাম নাই, তারপর প্রশাসনের দাবড় তাই কম লোক আসছে। তাও শনিবার ভোরে মোড়ে প্রায় দেড়শত লোক দেখা কাজের আশায় বসে আছেন। এছাড়াও নগরীর ময়লাপোতা মোড়েও দেখা যায় কাজের প্রত্যাশায় থাকা খেটে খাওয়া দিন মজুর।
সাতরাস্তার মোড়ে এই সময়ে কথা রিক্সা চালক আব্দুল সালামের সাথে, তিনি বলেন তেমন ইনকাম নাই। গতকার ১০০টাকা আয় হয়েছে কি করে সংসার চলে গাড়ি ভাড়া দিয়ে বলেন। পেটের দায়েই গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নেমেছি।
একই কথা অন্য রিক্সা চালক ও ইজিবাইক চালকদেরও।